কক্সবাজারের পেকুয়ায় ২০২১ সালে ছাত্রদলের স্বাগত মিছিলে হামলা, গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ এনে সাবেক এমপি জাফর আলমসহ ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক এম ফরহাদ হোছাইন বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনের ধারায় এই মামলা রুজু করা হয় মঙ্গলবার রাতে। গতকাল বুধবার এই মামলার নথিপত্র আদালতে পৌঁছলে তা জানাজানি হয়।
মামলায় কঙবাজার–১ আসনের সাবেক এমপি জাফর ছাড়াও অপর আসামিরা হলেন, পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, টৈটং ইউপির সদস্য নুরুল আবছার, মগনামার আশফাকুল হক, রাজাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল ইসলাম টিপু, রাজাখালী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ছৈয়দ নুর, শিলখালী ইউপির চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, টৈটং ইউপির সদস্য যুবলীগ নেতা আবু ওমর, উজানটিয়া ইউপির চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা তোফাজ্জল করিম, টৈটং ইউপির চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মফিজুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বারেক, আমিনুর রশিদ, কৃষকলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন, জেলা পরিষদ সদস্য এইচ এম শওকত, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কফিল উদ্দিন বাহাদুর, জাকারিয়া, কামাল হোছাইন, মো. এমরান, তৌহিদুল ইসলাম, শ্রমিকলীগ নেতা জহির উদ্দিন, মৎস্যজীবী লীগ নেতা বেলাল উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনছুর আলম, মেহেদী হাসান, নিষিদ্ধ সংগঠন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা আবছার উদ্দিন রানা, আওয়ামী লীগ নেতা জামাল হোছাইন, মো. আজমগীর, ওসমান সরওয়ার বাপ্পী, মগনামার সাবেক চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম, মো. ফোরকান, হারুনুর রশিদ মানিক, আবদুল আলীম ও আবদু রহিম।
মামলায় বাদী এম ফরহাদ হোছাইন এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০২১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিকেলে ঘোষণা করা হয় উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি। এরপর বের করা স্বাগত মিছিলে নেতা–কর্মীদের উপর অতর্কিত গুলি বর্ষণ, মারধর ও ককটেল নিক্ষেপ করেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। ওই ঘটনায় ছাত্রদলের নেতা কামরুজ্জামান সাঈদী, আবু তৈয়ব, এরশাদুল আলম, রেজাউল করিম মানিক, তামিম হোছাইন, মোহাম্মদ রাজুসহ আরও অনেকে আহত হন। সে সময় আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাদের প্রভাবে এই ঘটনায় মামলা নেয়নি পুলিশ। অবশেষে ছাত্রদলের আহ্বায়ক ফরহাদ হোছাইন বাদী হয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক এম ফরহাদ হোছাইন বলেন, স্বৈরাচার সরকারের আমলে আমাদের একটি মিছিলও করতে দেয়া হত না। মিছিলে হামলা হলে আমিসহ আমার ছাত্রদলের অংসখ্য নেতাকর্মী আহত হন। থানায় তখন ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা বসে ছিল। তাই আমরা মামলা করতে পারিনি বলে ন্যায় বিচারও পাইনি। আশা করি নতুন বাংলাদেশে আমরা ন্যায় বিচার পাব।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা বলেন, হামলা, গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।