প্রায় আট বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আবাসিক হলগুলোতে ৪ অক্টোবর আসন বরাদ্দ দিয়ে প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরের সপ্তাহে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে দ্বিতীয় মেধাতালিকা দেওয়ার কথা ছিল। তবে প্রায় চার সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সেটি প্রকাশিত হয়নি। এজন্য অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীরা বিপাকে রয়েছেন। বেশিরভাগের পরীক্ষা শুরু হওয়ায় হলের বাইরে থাকতে কষ্ট হচ্ছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
এদিকে আসন বরাদ্দের প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশের পর সেটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের কিছু অভিযোগ থাকায় এগুলো সমাধান করে দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করতে সময় লাগছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের প্রতিটি অভিযোগ আমলে নিয়ে কাজ হচ্ছে বলেও জানানো হয়।
জানা যায়, দীর্ঘ সময় পর বছরের শেষ দিকে ক্যাম্পাস সচল হওয়ায় প্রায় সব বিভাগে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় আবাসন ব্যবস্থার সুরাহা না হওয়ায় হতাশ অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরা।
অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী নয়ন মিয়া বলেন, প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশের এক সপ্তাহ পর আরেকটি মেরিট দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এখন ২০–২৫ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও মেরিট না পাওয়ায় বিপাকে আছি। এদিকে হলে উঠতে হলে বাসাও ছেড়ে দিতে হবে ১ তারিখ থেকে। দ্রুত হলের দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করা হলে উপকৃত হব।
শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব বলেন, প্রথম মেরিট প্রকাশের আগে শিক্ষার্থীদের যেমন আগ্রহ ছিল এখন তেমন দেখছি না। প্রায় ৫০ শতাংশ সিট খালি আছে, তবু কেন মেরিট দেওয়া যাচ্ছে না বুঝতে পারছি না।
শিক্ষার্থী তপন কুমার বলেন, আমার ওয়েটিং লিস্টে চতুর্থ নম্বরে আছি। প্রশাসন মেধাতালিকা দিলে আমি সিট পাব এই আশায় কটেজ ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু এখন বিপদে পড়তে হচ্ছে।
আইসিটি সেল এবং বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশের পর বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগ নিয়ে প্রায় ৭০০টি আবেদন পড়েছে। এগুলো সমাধান করতে সময় লাগছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা বলেন, কোনো বিভাগ থেকে ৫০ জন সিট পেয়েছে, আবার কোনো বিভাগ থেকে অল্প কয়েকজন সিট পেয়েছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী হলে আসন নেয়, কিন্তু অবস্থান করে না। এছাড়া এক শিক্ষার্থী দুই হলে আসন পেয়েছে।
জানা গেছে, ছাত্রী হলগুলোর মধ্যে আগে থেকেই প্রায় সিটে শিক্ষার্থীরা বৈধভাবে হলে অবস্থান করছেন। নতুন করে কিছু আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ছাত্র হলগুলো মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ আসন খালি রয়েছে। এর মধ্যে আলাওল ও এ এফ রহমান হলে প্রায় অর্ধেক আসন খালি। অন্য হলগুলোর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী হলে তেমন আসন খালি নেই। আমানত, শাহজালাল ও আব্দুর রব হলে কিছু আসন খালি রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন বলেন, হলের আসন বরাদ্দে অনিয়ম হয়নি। শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রেখে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ দেওয়ায় যেসব বিভাগে ফলাফল ভালো হয় সেসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা আসন বেশি পেয়েছে। আর যেসব বিভাগে তুলনামূলক সিজিপিএ কম উঠে সেসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা হলে আসন কম পেয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশের পর বেশ কিছু অভিযোগ পড়েছে। এগুলো বিবেচনায় নিয়ে কাজ চলছে। আমরা চাচ্ছি যে অভিযোগগুলো এসেছে পরবর্তী ফলাফলে এগুলোর পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে। এজন্য একটু দেরি হচ্ছে। যত তাড়াতাড়ি এই বিষয়ে কাজ শেষ হবে তত দ্রুত দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে।