যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে ২৭ অক্টোবর

কালুরঘাট সেতু

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৫ অক্টোবর, ২০২৪ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ ১৪ মাস সংস্কার কাজ শেষে অবশেষে আগামী ২৭ অক্টোবর কালুরঘাট সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে। আগামী ২৭ অক্টোবর সকালে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক, প্রধান প্রকৌশলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কালুরঘাট সেতু এলাকায় উপস্থিত হবেন। সংস্কার কাজ শেষে তারা যানবাহনসহ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেবেন।

এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম গতকাল রাতে আজাদীকে বলেন, কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ২৭ অক্টোবর সকালে সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। আনুষ্ঠানিক কোনো উদ্বোধনের আয়োজন নেই। সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে; তাই রেলওয়ের কর্মকর্তারা ২৭ অক্টোবর সেতুটি যানবাহন চলাচলে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেবেন।

রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের বৃহত্তম পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ট্রেন চালুর জন্য চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ টিমের তত্ত্বাবধানে সেতুটির সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিল গত বছরের ১ আগস্ট। সংস্কার কাজ শুরুর পর থেকেই গত ১৪ মাস সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের ৫ নভেম্বর কক্সবাজারের পথে রেল চলাচল শুরু হয়। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার যানবাহন চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেয়ার ঘোষণা দিলেও সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া সম্ভব হয়নি। কারিগরি সব দিক পরীক্ষানিরীক্ষা করে আগামী ২৭ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে।

পথচারী পারাপারের জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণ : কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট সেতু নির্মাণ হয়েছে ১৯৩০ সালে। সেতু নির্মাণের ৯৪ বছর পর পথচারীরা পায়ে হেঁটে পারাপারের জন্য রেল কর্তৃপক্ষ সেতুর ওপর দিয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে দিয়েছে। গত কোরবানীর ঈদে এই ওয়াকওয়ে খুলে দেয়া হয়। এখন একদিকে ট্রেন যাচ্ছে, পাশাপাশি উভয় পাড়ের মানুষ হেঁটে চলাচল করতে পারছে; এটা উভয় পাড়ের জনগণের জন্য অনেক উপকার হয়েছে বলে জানান বোয়ালখালীর বাসিন্দা মুজাহিদুল ইসলাম এবং উন্নয়নকর্মী চম্পা রানী।

কথা প্রসঙ্গে তারা বলেন, কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজে এক বছর পেরিয়ে গেছে। বোয়ালখালীর কয়েক লাখ মানুষকে গত এক বছর ধরে সীমাহীন দুর্ভোগ মাড়িয়ে চট্টগ্রাম শহরে আসাযাওয়া করতে হয়েছে। তবে এবার রেল কর্তৃপক্ষ সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য প্রথমবারের মত ওয়াকওয়ে নির্মাণ করেছে। এতে পথচারীদের সুবিধা হয়েছে। সেতু দিয়ে যানবাহন এবং ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি পথচারীরা পায়ে হেঁটে সেতু পারাপার হতে পারবে। কালুরঘাট সেতরু ওপর প্রথমবারের মতো ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে পথচারীদের পায়ে হেঁটে পারাপারের সুযোগ করে দেয়ায় রেলওয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান সেতুর বোয়ালখালী অংশের বাসিন্দা মুজাহিদুল ইসলাম ও চম্পা রানী দাশ। রেলওয়ের প্রকৌশলীরা জানান, প্রায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বুয়েট প্রকৌশলীদের পরামর্শে সংস্কার কাজ শেষ করা হয়েছে কালুরঘাট সেতুর। সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচলের পথ থাকায় রেল ট্র্যাকের অভ্যন্তরে পানি জমে রেলপাত ক্ষতিগ্রস্ত হতো। এ কারণে বছরের বিভিন্ন সময় রেল ট্র্যাক মেরামতের প্রয়োজনে সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য বন্ধ রাখা হতো। তবে এবার বিদ্যমান পাটাতনের ওপর বিশেষ প্রযুক্তির কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ রাখা হয়েছে। এরপর ওই কংক্রিট ঢালাইয়ের ওপর পিচ দিয়ে সড়কপথ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে সড়ক ও রেলপথ উভয়ই আগের চেয়ে শক্ত থাকবে বলে জানান রেলওয়ের প্রকৌশলীরা। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ টিমের তত্ত্বাবধানে সেতুটির সংস্কার কাজ করছে ম্যাক্স।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঈদগাঁওয়ে বন্যহাতির রহস্যজনক মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধবাইসাইকেলকে ধাক্কা দিয়ে বাস বিলে