মামলা করতে এসে নিজেই গ্রেপ্তার সাজাপ্রাপ্ত আসামি

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৪ অক্টোবর, ২০২৪ at ৭:৪৫ পূর্বাহ্ণ

প্রাইভেটকার ভাঙচুর করার অভিযোগে থানায় মামলা করতে এসে উল্টো নিজেই গ্রেপ্তার হয়েছেন সাজাপ্রাপ্ত এক আসামি। কর্ণফুলী উপজেলার ইমরান হোসেন বাবলু (২৯) নামের ওই যুবকের বিরুদ্ধে হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে কর্ণফুলী এলাকার জাফর আহমদ (৫২) হত্যা মামলার প্রধান আসামি তিনি। সাজাপ্রাপ্ত আসামি বাবলুকে গ্রেপ্তারের কথা নিশ্চিত করেছেন সিএমপি বন্দর জোনের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শাকিলা সোলতানা। গতকাল বুধবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, কর্ণফুলীর চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া (৬ নম্বর ওয়ার্ড) আবদুল মোনাফ বাড়ির রেজাউল করিমের ছেলে ইমরান হোসেন বাবলু বেশ কয়েকটি মামলার আসামি। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭ টা নাগাদ কর্ণফুলীর চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের আলী হোসেন এলাকায় একটি প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে প্রাইভেটকারের সামনের গ্লাস ভেঙে যায়। দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলেরও কিছুটা ক্ষতি হয়। প্রাইভেটকারের চালক ছিলেন ইমরান হোসেন বাবলু। এ ঘটনায় তিনি থানায় মামলা করতে আসেন। সাথে মোটরসাইকেল আরোহী দুইজনও থানায় আসেন।

পরে পুলিশ বিশ্বস্ত সূত্র ও তথ্য উপাত্ত যাচাইবাছাই করতে গিয়ে জানতে পারে যে, মামলা করতে আসা প্রাইভেটকার চালক বাবলু কর্ণফুলীর জাফর হত্যা মামলার প্রধান আসামি। তার বিরুদ্ধে চেক প্রতারণার মামলাও রয়েছে। পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, ইমরান হোসেন বাবলু সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তার বিরুদ্ধে ৩৫ লক্ষ টাকার চেক প্রতারণার একটি মামলা রয়েছে সিএমপির কোতোয়ালী থানায়। ওই মামলায় তার এক বছরের দণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।

পুলিশ বলেছে, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর কর্ণফুলী থানা পুলিশের এক বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার হন এই ইমরান হোসেন বাবলু ও সাজেদা বেগম সাজু। সাজেদা বেগম তার মা।

পুলিশ জানায়, বিগত ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া ফকির মসজিদের সামনে সংঘটিত জাফর আহমদ হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি ইমরান হোসেন বাবলু। ওই মামলায় আরো ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন নিহত জাফরের স্ত্রী ফাতেমা বেগম। এ ঘটনার পর জাফর হত্যাকাণ্ডে ইমরান হোসেন বাবলুর ফাঁসির দাবিতে কর্ণফুলী জুড়ে পোস্টারিং করেছিল এলাকাবাসী।

তার বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালান এবং ইয়াবা ব্যবসারও অভিযোগ রয়েছে। মাত্র বছর তিনেক আগেও হতদরিদ্র যুবক হিসেবে মানুষের বাড়ির কেয়ারটেকারের চাকরি করলেও আওয়ামী লীগের সাবেক এক মন্ত্রীর এপিএস সায়েমের সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তার পিতা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধেও ইয়াবা ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশ ইমরান হোসেন বাবলুর ব্যাপারে আরো তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে। কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে ইমরান হোসেন বাবলুকে গ্রেপ্তার করে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাবেক ইসি সচিব হেলালুদ্দীন খুলশী থেকে গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধফ্যাসিবাদ নির্মূলের আগ পর্যন্ত নির্বাচন অপ্রাসঙ্গিক : নাসিরুদ্দিন