সাকিব সমর্থক আর সাকিব বিরোধীদের দাঙ্গা হাঙ্গামা চলছিল আগের দিন থেকে। তাই গতকাল জোরদার করা হয় স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গতকাল মিরপুর টেস্টের প্রথম দনিে মাঠে প্রবেশের বিভিন্ন মোড়ে ছিল ব্যারিকেড। টিকিটধারী দর্শক, অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড পাওয়া লোকদেরও সব পথ দিয়ে মাঠ ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পাঠিয়ে দেওয়া হয় নির্দিষ্ট জায়গায়। স্টেডিয়ামের চারপাশে ছিল বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী। মূল ফটকের উল্টোপ্রান্তে সারি করে দাঁড়ানো ছিল সেনাবাহিনীর একের পর এক গাড়ি। ফটকের ঠিক সামনে অস্ত্র তাক করে সতর্ক অবস্থায় দাঁড়িয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছিল যেন যুদ্ধাবস্থা। সাকিব আল হাসানের পক্ষে–বিপক্ষে গত কয়েকদিনের আন্দোলন ও ঘটনা প্রবাহের পর বাংলাদেশ–দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট শুরুর দিন সকাল থেকেই নিরাপত্তা প্রবলভাবে জোরদার করা হয় শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের চারপাশে। টেস্ট ম্যাচে দর্শক এমনিতে কমই হয় বাংলাদেশে। তবু মিরপুরে ম্যাচ থাকলে খেলা শুরুর অনেক আগে থেকেই কিছু লোকের আনাগোনা সাধারণত থাকে। জার্সি, পতাকা বিক্রি করা হকাররা মাঠের সামনে বসে যান। দর্শকের পাশাপাশি উৎসাহী লোক থাকেন অনেকে। চারপাশে আওয়াজ থাকে অনেক। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম। মিরপুর ২ নম্বর মোড় থেকে প্রশিকা মোড় পর্যন্ত কেবল বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী ও কয়েকজন অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী ছাড়া আর কেউ ছিলনা। পুরো এলাকা কেমন সুনসান।
স্টেডিয়ামের চারপাশে গত কিছুদিন ধরে যা হচ্ছে, তাতে অবশ্য এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিস্ময় খুব একটা নেই। বিদায়ী টেস্ট খেলতে সাকিব আল হাসানের দেশে ফিরতে চাওয়াকে ঘিরে উত্তেজনা চলছে কিছুদিন ধরেই। সাকিবের দেশে ফেরা ঠেকাতে সোচ্চার ছিলেন কিছু লোক। সাকিব–বিরোধী মিছিল, নানা স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি স্টেডিয়ামের দেয়ালে নানা লেখা ও গ্রাফিতি আঁকাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় তাদের। পরে সাকিবকে বিদায়ী টেস্ট খেলার সুযোগ দিতে আন্দোলনে নামেন তার ভক্তরাও। দুই পক্ষের নানা কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় পরিস্থিতি সবচেয়ে উত্তপ্ত অবস্থায় পৌঁছে যায় টেস্ট শুরুর আগের দিন। মাঠের ১ নম্বর ও ২ নম্বর ফটকের সামনে রোববার দুপুরে সাকিব ভক্তদের মিছিলে বাঁশ, লাঠি নিয়ে হামলা চালায় সাকিব–বিরোধী কয়েকজন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিপেটার শিকারও হন সাকিবর ভক্তরা। তখন স্টেডিয়ামেই অনুশীলন করছিল দক্ষিণ আফ্রিকা দল। পরে বিকেলের দিকে আরও বড় সংখ্যক সাকিব–ভক্ত এসে মূল ফটকের সামনের জায়গার নিয়ন্ত্রণ নেয়। সাকিব–বিরোধীদের একটি দলও আসে। তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিলিয়ে ত্রিমুখী ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে সন্ধ্যার পর পর্যন্তও। সেসবের প্রেক্ষিতেই টেস্ট শুরুর সকালে নিরাপত্তায় এমন কড়াকড়ি।