আমার মুক্তি আলোয় আলোয়

আসিফ আল মাহমুদ | রবিবার , ২০ অক্টোবর, ২০২৪ at ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ

সেদিন আনমনে ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ একটা পোস্ট দেখে চোখ আটকে গেল। কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহিদ ‘আবু সাঈদ’ এর বাবা দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্‌বান জানিয়েছেন যেন তাঁর ছেলের স্মৃতিতে কোনও ভাস্কর্য বা মূর্তি নির্মাণ করা না হয়। তাঁর বক্তব্য হলো, ইসলাম কোনও প্রকারের মূর্তি বা প্রতিকৃতি নির্মাণ সমর্থন করে না। আদতে যথার্থই বলেছেন তিনি। সদ্য পুত্রহারা, বেদনায় দগ্ধ এক পিতার আকুল আর্তিশ্রদ্ধা জ্ঞাপনে আমরা যেন কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে না ফেলি। তাঁর মনস্তাপ আমি আঁচ করতে পারি। সত্যিকার অর্থে তাঁকে সমবেদনা জানাবার কোনও ভাষা আমার জানা নেই। পুত্রশোকে কাতর রোরুদ্যমান, বিলাপী এক পিতার জন্য কি কোনও সান্ত্বনা কিংবা সমবেদনা আদৌ যথেষ্ট! যে পিতা নিজের কাঁধে সন্তানের লাশ তুলেছেন, এর চাইতে ভারী বোধ করি আর কিছুই নেই। জানি না কী করে তিনি তাঁর বাকি জীবন এই যাতনার ভার বইবেন! এই দুঃখের জ্বালা সইবেন!

আমাদের বোধের দেয়ালে আজ স্যাঁতস্যাঁতে শ্যাওলা ধরেছে। তবে পথেঘাটে ধূলি মাখা, স্তব্ধ দেয়ালগুলো এখন আর বাকহীন নয়। ওগুলোও আজ গ্রাফিতি’র সোচ্চারে রাঙা হয়ে আওয়াজ তুলেছে! তুলির খোঁচা খেয়ে ফুঁসে উঠেছে, রংচঙা ভাষায় বলছে সেই আবু সাঈদদের কথা! গাইছে ওঁদেরই জয়গান। এই নওজোয়ানরাই তো এ যুগের সূর্যসেন কিংবা প্রীতিলতা!

বস্তুত আবু সাঈদ, মুগ্ধ’র মতো মানুষেরা বিশুদ্ধ আলোকের ফেরিওয়ালা হয়। মনুষ্য চেতনাকে গ্রাস করা কালো আঁধার ঘোচাতে ওঁরা আলো বিলি করে বেড়ায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ভর করা অপশাসনের দুরাচারী প্রেতাত্মা তাড়াতে আত্মবলিদানে ওঁরা স্বীয় মুক্তি খুঁজে ফিরে!

পূর্ববর্তী নিবন্ধচালকদের অন্যায্য ভাড়া প্রতিহত করুন
পরবর্তী নিবন্ধএক আনন্দের উৎসবের জন্য অপেক্ষা