চট্টগ্রাম বিশ্ববিধ্যালয়ের (চবি) আবাসিক হলগুলোতে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হচ্ছে ছাত্র প্রতিনিধির মাধ্যমে ডাইনিং পরিচালনার কার্যক্রম। এর আগে গত প্রায় এক দশক ধরে ডাইনিংয়ের কর্মচারীদের মধ্য থেকে একজন ডাইনিং পরিচালনার কাজে নিয়োজিত থাকতেন। অবশেষে দীর্ঘদিন পর বৈধভাবে হলে আসন বরাদ্দের মাধ্যমে নতুন করে সবকিছুর কার্যক্রম শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দাবির প্রেক্ষিতে হলের ডাইনিং পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। সোহরাওয়ার্দী হল দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু হবে। সুফল মিললে এই উদ্যোগ চালু হবে বাকি হলগুলোতেও।
জানা যায়, চবি আবাসিক হলগুলোতে প্রায় আট বছর পর বৈধভাবে হলে আসন পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আসন বরাদ্দের পর শৃঙ্খলা ফিরে আসলেও হলের ডাইনিংয়ে খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ উঠেছে। পরে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সোহরাওয়ার্দী হলের টেলিভিশন কক্ষে প্রভোস্ট ও হাউজ টিউটররা শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে ছাত্র প্রতিনিধির মাধ্যমে ডাইনিং পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য হলে ডাইনিং ম্যানেজার দিয়ে পূর্বের ন্যায় পরিচালিত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, আবাসিক হলগুলোতে এক সময় ছাত্র প্রতিনিধির মাধ্যমে হলের ডাইনিংগুলো পরিচালিত হতো। এক্ষেত্রে হল কর্তৃপক্ষ সব সময় তদারকি করতেন। আসন বরাদ্দ বন্ধ থাকায় হলে কোনো ধরনের শৃঙ্খলা ছিল না। হলের কর্মচারীদের একজন ডাইনিং পরিচালনা করতেন। হলে ছাত্রলীগ বাকি খাওয়ার কারণে অনেক ডাইনিং ম্যানেজার বাধ্য হয়ে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন আবার অনেকে নিম্নমানের খাবার দিতেন। হলগুলোর বাকির খাতা খুললে সেসব হিসাব পাওয়া যাবে। এখন যেহেতু নতুন করে সব শুরু হয়েছে। তাই মানসম্মত খাবার পরিবেশনের জন্য শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আবাসিক হল প্রশাসন।
ডাইনিং পরিচালনা করার জন্য ছাত্রপ্রতিনিধির কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে মাস্টার্স থেকে ৫ জন, চতুর্থ বর্ষ থেকে ৩ জন তৃতীয়, দ্বিতীয় ও প্রথম বর্ষ থেকে ১ জন করে শিক্ষার্থী নেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের ডাইনিং পরিচালনা সম্পর্কে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফুয়াদ মন্ডল বলেন, হলের ডাইনিংয়ে যে খাবার পরিবেশন করা হয় তা মানসম্মত নয়। এই খাবার খেয়ে কখনও আমাদের শরীর ঠিক থাকবে না। অথচ মানসম্মত খাবার শরীর ও মেধাবিকাশে অবদান রাখে। আমরা চাই শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ডাইনিং পরিচালনা করে আমাদের জন্য রুচি ও মানসম্মত খাবার পরিবেশন হোক। শিক্ষার্থীরা ডাইনিং পরিচালনা করতে পারলে আশা করি আমাদের জন্য ফলপ্রসূ হবে।
জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদেরই দ্বারা ডাইনিং পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছি। ছাত্ররা নিজেরাই ডাইনিং পরিচালনা করে নিজেদের জন্য মানসম্মত খাবারের ব্যবস্থা করবে। আমরা হল কর্তৃপক্ষ সবসময় তাদেরকে সহায়তা করবো এবং তাদের কাজে তদারকি করবো। আমরা চাই মানসম্মত খাবারের জন্য যেন কোনো আবাসিক শিক্ষার্থীর সমস্যা না হয়। যদি আমরা এই উদ্যোগে সফলতা পাই তাহলে এই নিয়ম অন্যান্য হলগুলোতেও চালু করা হবে।