বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে যারা ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে পাড়ি জমিয়েছিলেন, তাদেরকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে বিবেচনার আইনি বৈধতা বহাল রেখেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে এ আদেশ দেয়। বিচারকদের মধ্যে ভিন্নমত দিয়েছেন একজন। আদেশে বলা হয়, “এই সিদ্ধান্তের মানে হচ্ছে, যেসব অনিবাসী ভারতীয় ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এসেছে, তারা নাগরিকত্বের জন্য যোগ্য। যারা এর আওতায় নাগরিকত্ব পেয়েছেন, তাদের নাগরিকত্ব বহাল থাকবে।” এনডিটিভি লিখেছে, আসাম চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের ৬এ ধারায় অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সুযোগ রয়েছে, যারা ভোটাধিকার পান না। এই ধারার কারণে আসামের জনসংখ্যা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে বলে একটি রিট আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছিল। ওই আবেদনে বলা হয়, ৬এ ধারা আসামের মূল বাসিন্দাদের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার ‘লঙ্ঘন’ করেছে। আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, অনুপ্রবেশ নিয়ে আসাম চুক্তি ছিল একটি রাজনৈতিক সমাধান। যাতে ৬ এ ধারাটি ছিল। খবর বিডিনিউজের। আদালত আদেশে বলেছে, কেন্দ্রীয় সরকার এ আইনটি অন্যান্য রাজ্যেও করতে পারত, কিন্তু তারা তা করেনি কারণ এটি আসামের জন্য বিশেষ পরিস্থিতি ছিল। অভিবাসীর সংখ্যা ও সংস্কৃতিতে প্রভাবের প্রশ্নে আসামই এগিয়ে আছে। পশ্চিমবঙ্গ ৫৭ লাখ অভিবাসী ঢোকে, আর আসামে এই সংখ্যা ৪০ লাখ হলেও আসামে প্রভাব বেশি। কারণ পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে আসামে জমির পরিমাণ কম। নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রশ্নে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগের সময়কে যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করছেন বিচারপতি সূর্য কান্ত। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর ভারতে অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দেওয়া যায় না।