চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আবাসিক হলগুলোতে প্রায় আট বছর পর বৈধভাবে হলে আসন পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। আসন বরাদ্দের পর শৃঙ্খলা ফিরে আসলেও হলের ডাইনিংয়ে খাবারের মান ও নানা অনিয়ম নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে হলগুলোতে ছাত্র প্রতিনিধির মাধ্যমে হলের ডাইনিং পরিচালনার দাবিও উঠে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে।
শিক্ষার্থীরা জানান, আবাসিক হলগুলোতে এক সময় ছাত্র প্রতিনিধির মাধ্যমে হলের ডাইনিংগুলো পরিচালিত হতো। এক্ষেত্রে হল কর্তৃপক্ষ সব সময় তদারকি করতেন। আসন বরাদ্দ বন্ধ থাকায় হলে কোনো ধরনের শৃঙ্খলা ছিল না। হলের কর্মচারীদের একজন ডাইনিং পরিচালনা করতেন। হলে ছাত্রলীগ বাকি খাওয়ার কারণে অনেক ডাইনিং ম্যানেজার বাধ্য হয়ে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন আবার অনেকে নিম্নমানের খাবার দিতেন। হলগুলোর বাকির খাতা খুললে সেসব হিসাব পাওয়া যাবে। এখন যেহেতু নতুন করে সব শুরু হয়েছে। তাই আগের সেই সিস্টেম চালু করা হোক। কারণ ভালো খাবার খেয়ে সুস্থ থাকা একজন শিক্ষার্থীর জন্য খুব জরুরি। এ নিয়ে ইতিমধ্যে ছাত্র প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের ডাইনিং পরিচালনার উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে। গত মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট, আবাসিক শিক্ষক ও ডাইনিং ম্যানেজারের সাথে বসে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করা এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ডাইনিংয়ে খাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সাধারণ সভার আয়োজন করা হবে আজ শুক্রবার। এ বিষয়ে গত বুধবার সোহরাওয়ার্দী হল প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মান্নানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।
এতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক ও অনাবাসিক ছাত্র যারা হলের ডাইনিংয়ে খাবার খেতে ইচ্ছুক সকলকে খাবারের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে আগামী শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় হলের টেলিভিশন কক্ষে একটি সাধারণ সভার আহ্বান করা হয়েছে। এ সভায় ডাইনিংয়ে খাবার খেতে ইচ্ছুক সকল ছাত্রকে যথা সময়ে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হল।
এই বিষয়ে দর্শন বিভাগের ২০২১–২২ সেশনের সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. শিমুল মিয়া বলেন, মেধাবিকাশে খাওয়ারের গুরুত্ব অপরিসীম। মানসম্মত খাবার না খেলে শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশ কীভাবে হবে! আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সুষ্ঠু ও সুন্দর ব্যবস্থাপনায় ছাত্রপ্রতিনিধিনের মাধ্যমে ডাইনিং পরিচালনা করবে। আমাদেরকে মানসম্মত খাবার পরিবেশন করবে। মানসম্মত খাওয়ার নামে অতীতের ন্যায় ব্যবসা যেন না হয়।
সোহরাওয়ার্দী হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী মো. শাজাদাত গাজী বলেন, আমরা যারা আবসিক হলে আসন পাইনি কটেজ বা মেসে থাকি আমাদের জন্যও ডাইনিংয়ে খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং মানসম্মত খাবার পরিবেশ করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা চাই ছাত্রপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ডাইনিং পরিচালনা করবে সেখানে প্রভোস্টসহ হল কর্তৃপক্ষ সবসময় তদারকি করবে। যেমনিভাবে ঢাবি বুয়েটসহ বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ডাইনিং পরিচালিত হয়।
এই ব্যাপারে সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ডাইনিং ম্যানেজারের সাথে কথা বললে তিনি জানান এখন যে খাবার দিচ্ছে তার থেকে আর বেটার করতে পারবে না। তাই আমরা ছাত্রদের সাথে শুক্রবার বসে একটা কমিটি করে দেওয়া হবে, তাদের মাধ্যমে ডাইনিং পরিচালিত হবে। হল কর্তৃপক্ষ থেকে আমরাও সবসময় তদারকি করবো। আর এই সিস্টেম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আগেও ছিল। তাই ছাত্রদের দাবি মোতাবেক আমরা এই সিদ্ধান্ত নিব।