সৌন্দর্যের সংজ্ঞায় অলিখিত শর্ত হিসেবে থাকে বয়সের বিষয়টি। আর সেই বয়সকেই উড়িয়ে দিয়ে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার চোই সুন–হোয়া। মিস ইউনিভার্স কোরিয়ায় সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ প্রতিযোগী হিসেবে অংশ নিয়ে ইতিহাস গড়েছেন সাদা চুলের এই নারী। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের বয়সসীমা ছিল ১৮ থেকে ২৮ বছর। তবে এবার সেই বয়সসীমা উঠিয়ে নেওয়ার কারণে প্রতিযোগিতাতে অংশগ্রহণের সুযোগ পান চোই সুন–হোয়া। খবর বিডিনিউজের।
হোয়ার বয়স যখন বিশের কোঠায় ছিল তখনই তার স্বপ্ন ছিল ফ্যাশন মডেল হওয়ার। কিন্তু জীবনযুদ্ধের চাপের কারণে তার সেই স্বপ্ন বাস্তব হল পাঁচ দশক পর বৃদ্ধ বয়সে এসে। হোয়া বলেন, সুন্দরী প্রতিযোগিতায় বয়সসীমা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে শুনে আমি ভাবলাম বাহ্, দারুণতো। এ সুযোগ আমি হাতছাড়া করতে পারি না।
জয়ী হতে না পারলেও প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব পর্যন্ত যেতে পেরেছেন এই নারী। তার চেয়ে অনেক কম বয়সী প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে লড়াই করে তিনি জিতে নিয়েছেন বেস্ট ড্রেসড অ্যাওয়ার্ড। সন্তানের দেখাশুনা করা এবং আর্থিক চাহিদা মেটাতে কম বয়সে ফ্যাশন মডেল বা সিনেমার তারকা হওয়ার স্বপ্ন দূরে সরিয়ে রেখে চাকরি করতে হয়েছিল হোয়াকে।
হাসপাতালে রোগীদের পরিচর্যার কাজ করতেন হোয়া। একদিন এক রোগী তাকে পরামর্শ দেন, ৭২ বছর বয়সে তিনি জ্যেষ্ঠ মডেল ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে পারবেন। এ ঘটনাই মূলত তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
হোয়া তখন চাকরির পাশাপাশি একটি মডেলিং একাডেমিতে ভর্তি হন। হাসপাতালের পরিবেশ গভীর রাতে শান্ত হয়ে এলে তিনি ক্যাটওয়াক করতেন এবং আয়নার সামনে পোজ দিতেন। এভাবেই চলত তার মডেলিং চর্চা। এরপর থেকে হোয়ার কর্মজীবন বদলে যায়। তিনি একাধিক ফ্যাশন শোতে অংশ নেন। ম্যাগাজিনে তার ছবি ছাপা হয়। টিভি শো’তে প্রচার হয় তার জীবনকাহিনী। হোয়া রয়টার্সকে বলেন, জীবনের দ্বিতীয়ার্ধে এসে আমি জিতেছি। প্রথম ভাগে কোনও লক্ষ্য ছাড়াই ছুটছিলাম। অবশেষে সফল হয়েছি। মিস ইউনিভার্স কোরিয়ার আরেক বয়স্ক মডেল ৫৯ বছর বয়সী উন মি–ইয়ং জানান, চোই–সুন হোয়াকে দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন। উন মি–ইয়ং বলেন, যখন তাকে (চোই–সুন হোয়া) প্রথম টিভিতে দেখি, তখন তাকে দারুণ লাগছিল। ভাবলাম, আমিও তার মতো বায়োজ্যেষ্ঠ মডেল হব।