তিন পার্বত্য জেলায় এ বছর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার ঘোষণা দিয়েছেন ভিক্ষুরা (ধর্মীয় গুরু)। গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল সোমবার দুপুরে জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভা ডাকে প্রশাসন। তবে মতবিনিময় সভার আগে ভিক্ষুদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রশাসন। এ সময় জেলাপ্রশাসক রাঙামাটিতে চীবর দান আয়োজনের জন্য অনুরোধ জানালেও সময় নিয়েছেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। আর মতবিনিময় সভায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নেতারা বলছেন, ভিক্ষুদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে চীবর দান আয়োজন।
কঠিন চীবর দান–২৪ পালনের লক্ষ্যে রাঙামাটিতে মতবিনিময় সভায় জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, কঠিন চীবর দান পালনে রাঙামাটিতে নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি থাকবে না। নির্বিঘ্নে কঠিন চীবর দান পালন করতে পারবে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিরাপত্তার বলয় আগের চাইতে আরও বাড়ানো হবে।
মতবিনিময় সভায় জেলাপ্রশাসকের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার ড. এসএম ফরহাদ হোসেন, রাঙামাটি রাজবন বিহার পরিচালনা কমিটির সহ–সভাপতি নিরূপা দেওয়ান, মৈত্রী বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পূর্ণচন্দ্র দেওয়ান, রাঙামাটি প্রেসক্লাব সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হারুন মাতব্বর, জামায়াত ইসলামীর জেলা আমীর আবদুল আলিম প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় রাঙামাটির পুলিশ সুপার ড. এসএম ফরহাদও বলেছেন, যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগেও নেয়া হয়েছে, সেটাকে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা আরও আধুনিকভাবে পরিকল্পনা নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সাজাব। নিশ্চিতভাবে বলতে পারি এখানে নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা নেই। এর আগে, দুপুরে ১২ টার দিকে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সঙ্গে জেলাপ্রশাসকের কক্ষে বৈঠক করেন জেলাপ্রশাসক।
ভিক্ষুদের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে মতবিনিময় সভায় জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, আমরা ভান্তেদের সঙ্গে কথা বলেছি, উনাদের কথাগুলো শুনেছি। তারা বলেছেন, শুধু রাঙামাটি ঠিক থাকলে হবে না, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের পরিস্থিতিগুলো দেখতে হবে। যেহেতু তারা তিন পার্বত্য জেলার ভিক্ষুরা সম্মিলিত হয়ে কঠিন চীবর দান না করা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সে ক্ষেত্রে তারা এককভাবে সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন এবং আমাদের থেকে সময় চেয়েছেন। আমরা রাঙামাটিতে সর্বোচ্চটা দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আশ্বস্ত করেছি।