কালুরঘাটের ফেরিঘাট দিয়ে ফেরিতে পারাপার হওয়া যাত্রীদের মাঝে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা যায়। ফেরি ছাড়ার পরে ও ঘাটে ভেড়ার আগেই কিছু মানুষ ঝুঁকি নিয়ে দৌড়ে লাফ দিয়ে উঠানামা করে। ফলে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সরেজমিনে দেখা যায়, ফেরিতে যানবাহন উঠার সাথে সাথে যাত্রীরাও উঠতে থাকে। পূর্ব দিক থেকে ফেরি ছেড়ে দেয়ার পরেও অনেককে লাফ দিয়ে ফেরিতে উঠতে দেখা যায়। পশ্চিম দিকে ফেরি ঘাটে ভেড়ার আগেও দেখা যায় একই চিত্র। এভাবে ফেরিতে উঠানামা নিয়ে যাত্রীদের মাঝে এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করে। ফলে যে কোন মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ফেরিতে পারাপার হওয়া যাত্রী মো. এনামুল হক বলেন, ফেরিতে উঠানামা এক ধরনের প্রতিযোগিতার মত হয়ে গেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দৌড় ঝাঁপ করে যেন ফেরিতে উঠতেই হবে। না হলে যেন তাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। মূলত এসব অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আমরা যতদিন সচেতন হবো না ততদিন দুর্ঘটনা লেগেই থাকবে। আবদুস সাত্তার নামে এক যাত্রী বলেন, ফেরি ঘাটে ভেড়ার সময় দেয় না অনেক যাত্রী। দৌড়–ঝাঁপ করে ঘাটে উঠে যায়। এ সময় ঘাট ও ফেরির মাঝখানে অনেকটা জায়গা খালি থাকে। দুর্ঘটনাবশত সে জায়গায় পড়ে গেলে মানুষটিকে আর খুঁজেও পাওয়া যাবে না। অধিকাংশ দুর্ঘটনার মূল কারণ আমরাই। আমরা জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছি। অটোরিকশাচালক আবদুল করিম বলেন, ফেরি ঘাটে আসার পর পারাপার করা যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে ঘাটে উঠতে থাকে। সতর্কতা অবলম্বন না করার কারণে যে কোনো মুহুর্তে নদীতে পড়ে যেতে পারে। এক ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয় তাদের মাঝে। তাদের কারণে গাড়িও ঘাটে তুলতে কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর ফেরি থেকে অটোরিকশা নদীতে পড়ে চারজন আহত হয়েছে। জানা যায়, ফেরি চালু অবস্থায় গাড়ির সামনের চাকা ফেরিতে তুলে দেয় চালক। ফেরি সামনের দিকে চলে যাওয়াতে গাড়িটি নদীতে পড়ে যায়।
ফেরি কর্তৃপক্ষ জানায়, পারাপার করা যাত্রীদের বারবার সতর্ক করার পরেও তারা মানছে না। কিছু বললে ঝগড়া বিবাদসহ গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করে। জনসাধারণ পারাপারের জন্য সেতুতে ওয়াকওয়ে দেয়ার পরেও তারা ঝুঁকি নিয়ে ফেরি দিয়ে পার হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রাম অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, মানুষ যদি সচেতন না হয় এতে আমাদের কিছুই করার নেই। ওয়াকওয়ে থাকার পরেও তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফেরি পার হচ্ছে। তারপরেও কিছুদিনের মধ্যে একটি (সাইনবোর্ড) সতর্কবার্তা ফেরিঘাটে দিয়ে দিব। যাতে মানুষ সচেতন হয়।