মুহাম্মদ আনোয়ার আল–সাদাত (১৯১৮–১৯৮১)। নোবেল শান্তি বিজয়ী মিশরীয়। তিনি ছিলেন মিশরের তৃতীয় রাষ্ট্রপতি। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ ই অক্টোবর থেকে নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বপালন করেছেন। সাদাত ছিলেন ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের বিপ্লবে বাদশাহ ফারুককে ক্ষমতাচ্যুতকারী স্বাধীন অফিসারদের মধ্যে অন্যতম সিনিয়র অফিসার এবং জামাল আবদেল নাসেরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। নাসেরের অধীনে সাদাত দুই দফায় ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপালন করেছেন এবং ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে নাসেরের উত্তরসূরি হিসেবে রাষ্ট্রপতি হন। মুহাম্মদ আনোয়ার আল–সাদাত ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ শে ডিসেম্বর মিশরের মুনাফিয়া প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জামাল আল নাসের সরকারের মন্ত্রী ছিলেন এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি হন। পিতার মৃত্যুর পর মুহাম্মদ আনোয়ার আল–সাদাত তার পিতার স্থলাভিষিক্ত হন। ১৯৭০–১৯৮১ সাল ১১ বছরের রাষ্ট্রপতিত্বকালে আনোয়ার সাদাত মিশরে অনেক পরিবর্তন আনেন। নাসেরবাদের অনেক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ধারাকে বিদায় দিয়ে, বহুদলীয় প্রথার প্রবর্তন করেন এবং ইনফিতাহ নামক অর্থনৈতিক নীতি চালু করেন। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে মিশরের সিনাই উপদ্বীপ উদ্ধারের জন্য ইয়ম কিপুর যুদ্ধে তিনি মিশরের নেতৃত্ব দেন। ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে ছয়দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল তা দখল করে নিয়েছিল। এ কারণে মিশর ও আরব বিশ্বে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। এরপর তিনি ইসরায়েলের সাথে আলোচনায় বসেন এবং মিশর–ইসরায়েল শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির কারণে আনোয়ার সাদাত ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাখেম বেগিম শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু মিশরের তৃতীয় রাষ্ট্রপতি আনোয়ার সাদত। ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরের ০৬ ই অক্টোবর মাসে কায়রোতে এক সামরিক প্যারেড পরিদর্শনের সময় কিছু সামরিক অফিসারের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত।