কয়েক বছরের মধ্যে মার্কিন স্পন্সরদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া কয়েক লাখ অভিবাসীর আইনি বৈধতা বা অস্থায়ী মানবিক এন্ট্রি কর্মসূচী নবায়ন করবে না বাইডেন প্রশাসন, জানিয়েছে দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়।
রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২২ সালের অক্টোবর হতে কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলা থেকে আকাশপথে প্রায় পাঁচ লাখ ৩০ হাজার অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে যায় আর তারা সেখানে ওই প্যারোল কর্মসূচীর অধীনে দুই বছরের জন্য বৈধতা পায়। কিন্তু আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ওই বৈধতার মেয়াদ শেষ হতে শুরু করবে। তবে এই অভিবাসীদের অনেকে অন্য কর্মসূচীগুলো অধীনে দেশটিতে থাকতে পারবেন বলে জানা গেছে। ওই প্যারোল কর্মসূচী বিদ্যমান মার্কিন স্পন্সরদের মাধ্যমে আসা অভিবাসীদের মানবিক কারণে বা তাদের আগমণ একটি উল্লেখযোগ্য সরকারি সুবিধা হিসেবে গণ্য হলে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দেয়। যারা বিদেশ থেকে আবেদন করবে এই কর্মসূচী সেগুলো গ্রহণ করা অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। খবর বিডিনিউজের।
যুক্তরাষ্ট্র–মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ হ্রাস করতে আর অভিবাসীদের বৈধভাবে প্রবেশের উপায় হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এই প্যারোল কর্মসূচী চালু করেছিল। বাইডেনের মেয়াদকালে অবৈধভাবে এই সীমান্ত অতিক্রম করার সময় রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসন প্রত্যাশী আটক হয়েছেন। কিন্তু বাইডেন সীমান্তে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করার পর থেকে গত কয়েক মাসে অনুপ্রবেশ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে অভিবাসন একটি শীর্ষ ইস্যু। এই নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প বাইডেনের ওই প্যারোল কর্মসূচীর তীব্র সমালোচনা করেছেন। এই ইস্যুটি ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে সমস্যায় ফেলে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ের (ডিএইএস) মুখপাত্র নারি কেটুডা এক বিবৃতিতে বলেছেন, কর্মসূচীটি চালু করার সময় ডিএইএসের করা পরিকল্পনার রূপরেখা অনুযায়ী ওই চার দেশের জন্য প্যারোল কর্মসূচীটি নবায়ন না করা সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেটুডা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকার আর অনুমতি নেই এমন অভিবাসীদের তাদের অনুমোদিত প্যারোলের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যেতে হবে অথবা তাদের অপসারণের প্রক্রিয়ায় রাখা যেতে পারে।
এদিকে ইউক্রেইনীয় ও আফগানিদের জন্য জারি থাকা অন্য প্যারোল কর্মসূচীগুলোর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। লাতিন আমেরিকার ওই চার দেশের অধিকাংশ নাগরিককে তথাকথিত সিএইচএনভি প্যারোল কর্মসূচীর আওতায় প্রবেশের অনুমতি দিয়ে অস্থায়ী বৈধতা দেওয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে অনেক কিউবান নাগরিক ১৯৬৬ সালের কিউবান অ্যাডজাস্টমেন্ট আইনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের জন্য যোগ্য বিবেচিত হতে পারেন আর তারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
যুক্তরাষ্ট্রে থাকা অধিকাংশ হাইতিয়ান ও ভেনেজুয়েলান টেম্পোরারি প্রটেক্টেড স্ট্যাটাসের জন্য যোগ্য বিবেচিত হতে পারেন আর এটি তাদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া থেকে রক্ষা করবে আর তারা ওয়ার্ক পারমিট পাবেন। আর সর্বশেষ ওই চার দেশের নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে পারবেন।