টেস্ট সিরিজে ভারতের কাছে নাস্তানাবুদ হওয়া বাংলাদেশ আজ থেকে তাদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করছে। আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৩০টায় গোয়ালিয়রে প্রথম ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। টেস্ট সিরিজে হারের দুঃস্মৃতি পেছনে ফেলে একেবারে নতুন লক্ষ্য নিয়ে ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করবে সফরকারী বাংলাদেশ।
টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত। ব্যাটিং বোলিং ফিল্ডিং সবদিক দিয়েই সেরা সব খেলোয়াড়ের সমাবেশ দলটাতে। যদিও বিশ্বজয়ী দলটির অনেকেই বর্তমান দলে নেই। তবুও তাদের বিপক্ষে তরুণ এবং অভিজ্ঞ খেলোয়াড় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ কতটা কি করতে পারবে তা মাঠেই দেখা যাবে। তবে তাদের দিনে টাইগাররা ভারতকে চমকে দিতে পারে। যদিও ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টেই বাংলাদেশের ব্যাটাররা যাচ্ছেতাই ব্যাটিং করেছেন। এখন দেখার বিষয় তারা কতটুকু ফিরে আসতে পারে টি–টোয়েন্টিতে। দলের সাথে ইতিমধ্যে টি–টোয়েন্টি স্পেশালিস্টরা যুক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে হতাশা আছে সাকিবকে নিয়ে। সাকিব টি–টোয়েন্টিকে বিদায় বলে দিয়েছেন। ফলে তার সার্ভিস আর পাচ্ছে না বাংলাদেশ দল। তাই নতুন পুরাতন মিলেই তাদের লড়তে হবে ভারতের বিপক্ষে। অলরাউন্ডার মেহেদী মিরাজ দলভুক্ত হয়েছেন। এর আগে হেড কোচ হাতুরাসিংহ সাকিবের বিকল্প হিসেবে মিরাজের কথা বলেছিলেন। আগের দিন গোয়ালিয়রে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, ‘এই সিরিজে আমাদের খেলোয়াড়রা অন্য এক অ্যাপ্রোচে খেলার চেষ্টা করছে। সবাই জয়ের জন্য খেলবে।’ টি–টোয়েন্টিতে সাকিবের অভাব মিরাজ পূরণ করতে পারবেন জানিয়ে শান্ত বলেন, সাকিব ভাই এতদিন ধরে আমাদের দলের সাথে ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই তার জায়গা পূরণ করতে কিছুটা সময় লাগবে। তিনি আরও বলেন, আমি এটাকে বড় সমস্যা বলবো না। তবে তাকে ছাড়া একাদশ সাজাতে কিছুটা অসুবিধা হবে। ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগেই ভালো কম্বিনেশন দিতেন সাকিব। আমরা মিরাজকে নিয়ে এসেছি এবং আশা করি ঐ জায়গায় দ্রুত মানিয়ে নিবে সে।
এর আগে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল টাইগাররা। চেন্নাইতে প্রথম টেস্ট ২৮০ রানের ব্যবধানে হারে টাইগাররা। দ্বিতীয় টেস্ট আড়াই দিনের বেশি সময় বৈরি আবহাওয়ায় ভেস্তে যাওয়ার পরও পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশনে এসে ৭ উইকেটে হার মানে বাংলাদেশ। দুই টেস্টেই লজ্জাজনক হারের কারণে ভারতের বিপক্ষে বড় সংস্করণে প্রথম জয়ের অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হয়েছে বাংলাদেশের। টি–টোয়েন্টি ফরম্যাটেও ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড খুব একটা ভালো নয়। ১৪ ম্যাচের ১৩টিতেই হার ও একটিতে জিতেছে টাইগাররা। ২০১৯ সালে ভারতের মাটিতে সর্বশেষ সফরে একমাত্র জয়টি পেয়েছিলো বাংলাদেশ। ঐ সময় তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজ ৭ উইকেটের জয় দিয়ে শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু রাজকোট এবং নাগপুরে শেষ দুই ম্যাচ যথাক্রমে ৮ উইকেটে ও ৩০ রানে হেরেছিলো টাইগাররা। ফলে সিরিজে দারুণ সূচনার পরও ২–১ ব্যবধানে হারতে হয় তাদের। টেস্ট সিরিজে সাফল্য না পেলেও টি–টোয়েন্টিতে জয়ের ভালো সুযোগ বাংলাদেশের সামনে আছে। কারণ ভারত দলের দুই সেরা তারকা রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির অবসরের পর ভারতের টি–টোয়েন্টি দল একটি বড় পরিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। টেস্ট সিরিজ খেলা বাংলাদেশের বেশিরভাগ খেলোয়াড় টি–টোয়েন্টি দলে থাকলেও ভারতের টেস্ট দলের কোনো খেলোয়াড়েরই টি–টোয়েন্টি স্কোয়াডে জায়গা পায়নি।
অধিনায়ক শান্ত জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে লক্ষ্য করে এখন থেকেই প্রতিটি সিরিজের পরিকল্পনা সাজানো হবে। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি বর্তমানে দলে থাকা খেলোয়াড়দের পাশাপাশি আরও চার–পাঁচজন যোগ হবে, তারাই ২০২৬ সালে বিশ্বকাপে খেলতে পারে। আমি মনে করি এই সিরিজ থেকে আমাদের বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু হবে। এখন থেকে অবশ্যই ২০২৬ সালে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা আমরা পরিকল্পনায় রাখবো। এই দলে ১৫ জন খেলোয়াড় আছে এবং এর বাইরে আরও ৪/৫ জন আছে। এই ২০–২২ জন খেলোয়াড়কে নিয়ে আমরা প্রস্তুতি নিবো। ভবিষ্যতে তারাই খেলবে। এজন্য এখন থেকে প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে।