আসাদ চৌধুরী : গণমুখী, নান্দনিক ও রোমান্টিক কবি

| শনিবার , ৫ অক্টোবর, ২০২৪ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

আসাদ চৌধুরী (১৯৪৩২০২৩)। তিনি একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও আবৃত্তিকার। আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান কবি। তিনি টেলিভিশন উপস্থাপনা ও চমৎকার আবৃত্তির জন্যও জনপ্রিয়। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তার পদচারণা। আসাদ চৌধুরী ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী এবং মাতার নাম সৈয়দা মাহমুদা বেগম। তিনি ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা এবং ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীকালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে অধ্যাপনার মধ্যদিয়ে তিনি চাকরিজীবন শুরু করেন। এ কলেজে তিনি ১৯৬৪ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীকালে ঢাকায় চলে আসার পর বিভিন্ন খবরের কাগজে সাংবদিকতা করেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ভয়েজ অব জার্মানীর বাংলাদেশ সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘকাল ঢাকায় বাংলা একাডেমিতে চাকরির পর তিনি পরিচালক হিসেবে অবসরে যান। অবসর জীবনে তিনি একসময় উত্তর আমেরিকার কানাডায় বসবাস শুরু করেন। সেখানকার বাঙালি ও বাংলা সাহিত্যের সাথে তিনি শুরু করেন আত্মীয়তা। উত্তর আমেরিকায় বাংলা সাহিত্যের অগ্রযাত্রা এবং সেখানকার সাহিত্যানুরাগীদের বাংলা ভাষা ও কৃষ্টিতে আকৃষ্ট করতে তার অবদান অসীম ও অনস্বীকার্য। আসাদ চৌধুরী ছিলেন মূলত কবি। তিনি তাঁর কবিতায় গণমুখী, নান্দনিক ও রোমান্টিক। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বাংলার লোকায়ত জীবন সবই তাঁর লেখায় স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তুলেছেন। কবিতা ছাড়াও তিনি বেশ কিছু শিশুতোষ গ্রন্থ, ছড়া, জীবনী ইত্যাদি রচনা করেছেন। তিনি বেশকিছু অনুবাদকর্মও সম্পাদন করেছেন। তাঁর বেশকিছু জনপ্রিয় গ্রন্থ রয়েছে। তার মধ্যে কবিতা : তবক দেওয়া পান, জলের মধ্যে লেখাজোখা, যে পারে পারুক, ঘরে ফেরা সোজা নয়। শিশুসাহিত্য: কেশবতী রাজকন্যা, সোনার খড়ম, অনুবাদ : বাড়ির কাছে আরশিনগর : বাংলাদেশের উর্দু কবিতা উল্লেখযোগ্য। সাহিত্যে অবদার স্বরূপ তিনি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মননায় সম্মানিত হন। তারমধ্যে অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার (১৯৮২), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৭), একুশে পদক (২০১৩) উল্লেখযোগ্য। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ০৫ অক্টোবর তিনি কানাডায় মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধপ্রতিটি সড়কে সিগন্যাল বাতি চালু করা হোক