প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত রোহিঙ্গা সংকটকে একটি তাজা টাইম বোমা অভিহিত করে এটি যে কোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে বলে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়কে সতর্ক করে দিয়েছেন। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুরো বিশ্বের জন্য উদ্বেগের বিষয় হলো, এটি একটি তাজা টাইম বোমা, যা যে কোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত ও আন্তর্জাতিক সমাধানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, এ সমস্যার সমাধান বাংলাদেশের হাতে নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হাতে। খবর বাসসের।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা বিষয়টি উত্থাপন করতে থাকব। মালয়েশিয়া আমাদের সহযোগিতা করবে। আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অপেক্ষা
করতে পারি না। এটি এমন এক বিষয় যা আমাদের যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করতে হবে। তিনি বলেন, তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন। এটি মালয়েশিয়ার জন্যও একটি সমস্যা। সেখানে অল্প সংখ্যক রোহিঙ্গা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এটি বাংলাদেশের একার সমস্যা নয়, মালয়েশিয়ারও সমস্যা। আমাদের এই সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে এবং আমরা আসিয়ান, মালয়েশিয়ার সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করব।
মালয়েশিয়া ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আসিয়ানের পরবর্তী চেয়ার হতে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকটের দুটি দিক তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, গত ৭ বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বছরে গড়ে ৩২ হাজার শিশু জন্মগ্রহণ করেছে। প্রতিদিন প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। কঙবাজারে অবস্থিত আশ্রয় শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গা তরুণদের একটি পুরো নতুন প্রজন্ম বেড়ে উঠছে। এটি ক্ষুব্ধ তরুণদের একটি প্রজন্ম। তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি এই উদ্বেগের কথা মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছি।
ইউনূস বলেন, মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশকে পূর্ণ সহযোগিতা করছে। এই সমস্যার একটি আন্তর্জাতিক সমাধান খুঁজতে মালয়েশিয়া আসিয়ান ও আন্তর্জাতিক ফোরামের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে। বাংলাদেশ এখন কঙবাজার ও ভাসানচরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে।