ঐতিহাসিক রায়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে : শাহাদাত

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২ অক্টোবর, ২০২৪ at ৪:২৬ পূর্বাহ্ণ

মেয়র ঘোষণা করে দেয়া রায়কে ঐতিহাসিক বলে মন্তব্য করেন নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিচার ও আইন বিভাগের স্বাধীনতা নষ্ট করে ফেলেছিল। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে। রায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরে এসেছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আজাদীকে এসব কথা বলেন তিনি। ডা. শাহাদাত বলেন, নির্বাচনের সময় আমাদের ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা উজ্জ্বীবিত ছিল। এ রায় ঘোষণার মাধ্যমে সত্য উন্মোচিত হওয়ায় আমার ভালো লাগছে। আমাদের নেতাকর্মীরা অনেক জেল জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হন। আমার বিরুদ্ধেও ১০০’র বেশি মামলা আছে। কাজেই এ রায়ে আমি খুুশি। আশা করছি নির্বাচন কমিশন অনতিবিলম্বে রায়টি কার্যকর করবে।

ডা. শাহাদত বলেন, আমি বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ঘুরে দেখেছি ৫ শতাংশও ভোট পড়েনি। কিন্তু তারা সেটা ২৩ শতাংশ দেখিয়েছে। ওই সময়ই আমি বলেছিলাম মামলা করব। এরপর আমাকে যখন রেজাল্ট দেয়া হল সেখানে ইভিএমের কোনো প্রিন্টেড কপি দেয়নি। সেখানে হাতে লিখে ফলাফল দেয়। তখনও আমি বলেছি, এই রেজাল্ট আমি নেব না। যদি ইভিএমের প্রিন্টেড কপি হয় তাহলে নেব। ওটাই মামলার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল।

তিনি বলেন, সাড়ে ৩ বছর ধরে ওদেরকে ইভিএমের হার্ডডিস্ক দিতে বলেছেন বিচারক। কিন্তু তারা দিতে পারেনি। তাই এ মামলার রায় অটোমেটেড আমার দিকে চলে আসে। তারা যে ভোট ডাকাতি করেছে সেটা প্রমাণ হয়েছে আদালতে।

এর আগে রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগকে দীর্ঘদিন ধরে নিজের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। এর অংশ হিসেবে ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি ভোট ডাকাতির মাধ্যমে চসিক নির্বাচনে রেজাউল করিমকে মেয়র ঘোষণা করেছিল। পরবর্তীতে ২৪ ফেব্রুয়ারি চসিকের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে আমি মামলা করেছিলাম। এ মামলার রায়ে আজ আদালত আমাকে মেয়র ঘোষণা করেছেন। রেজাউল করিমের যে গেজেট সেটা বাতিল করেছেন আদালত।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সচিবকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে আমাকে চসিকের মেয়র পদে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছর ও মঈনউদ্দিনফখরুদ্দিন সরকারের দুই বছরের আমলে বাংলাদেশে কোনো আইনের শাসন ছিল না। ড. ইউনুছের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। এ রায়ের মধ্যে দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

শাহাদাত বলেন, গত ১৬ বছর ধরে বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় সমস্ত নেতাকর্মী, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সেগুলোর প্রত্যাহার আমরা চাচ্ছি। এ রায়ের মাধ্যমে একটি মাইলফলক সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এ রায়ের প্রতি সম্মান রেখে ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করে চসিক মেয়রের দায়িত্ব আমাকে বুঝিয়ে দেবেন বলে আমি আশা রাখি।

আদালতের এ রায়ে তিনি খুশি কিনা সাংবাদিকের এ প্রশ্নে তিনি বলেন, শুধু আমি নই, সারাদেশের মানুষ খুশি। সারাদেশের যেসব মানুষ অবৈধ স্বৈরাচারী সরকারের মামলা, হামলা, খুন ও গুমের শিকার হয়েছেন তারা আজ আমার এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচবির আমানত হলেও মিলল রামদা
পরবর্তী নিবন্ধসুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হতেন শাহাদাত