চট্টগ্রামে সরকারি ও স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থাগুলোর কাছে পিডিবির বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার পরিমাণ ১২৪ কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাছে। চসিকের কাছে পিডিবির বকেয়া পাওনার পরিমাণ ৫৯ কোটি ৫২ লাখ ৮৬ হাজার ৩০২ টাকা। পিডিবির তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে ২৭টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে এই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) আকবর হোসেন আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাছে পিডিবির মোট বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ৫৯ কোটি ৫২ লাখ ৮৬ হাজার ৩০২ টাকা। এরমধ্যে সিটি কর্পোরেশনের মেমন মাতৃসদন হাসপাতালে গত আগস্ট পর্যন্ত বকেয়া বিলের পরিমাণ ১৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৭ টাকা।
পিডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ বিভাগের বকেয়া বিলের খাতায় নাম উঠেছে সরকারি অনেক সংস্থার। বিশেষ করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, পুলিশ, রেলওয়ে, স্বাস্থ্য বিভাগীয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, জনস্বাস্থ্য, ওয়াসা, বন বিভাগ, শিক্ষা বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, খাদ্য অধিদফতর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ সরকারি ও স্বায়ত্ত্বশাসিত এমন অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে পিডিবির বকেয়া বিলের পরিমাণ ১২৪ কোটি ৬৫ লাখ ৭ হাজার ১১৩ টাকা।
পিডিবির তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে যেসব সরকারি দপ্তরে বকেয়া বিল পাওয়া রয়েছে তার মধ্যে রেলওয়ের কাছে বকেয়া পাওনা ৩ কোটি ৩৫ লাখ ১০ টাকা ৭ টাকা। শুধুমাত্র রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের সিআরবি কার্যালয়ে গত ৬ মাসে ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। এছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া ৮ কোটি ১৩ লাখ ৩২ হাজার ২১ টাকা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৪ কোটি ৮৫ লাখ ২২ হাজার ২৪, গণপূর্ত বিভাগে ১ কোটি ৫০ লাখ ২৫ হাজার ৫৯৭ কোটি, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ১ কোটি ২৯ লাখ টাকা, সড়ক ও জনপথ বিভাগে ৬৮ লাখ ৪৭ হাজার ২২৯, জনস্বাস্থ্যে ৫ কোটি ৭৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৬৮, চট্টগ্রাম ওয়াসায় ১৯ লাখ ৪১ হাজার ২৬৫, বন বিভাগে ১০ লাখ ৪ হাজার ৪০৭, শিক্ষা বিভাগে ৭০ লাখ ৩০ হাজার ১২২, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ৭০ হাজার ৩২৫ ও খাদ্য অধিদফতরে ৯৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭৯৭ টাকা বকেয়া রয়েছে।
পিডিবির সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, নতুন বিদ্যুৎ আইনে এখন প্রতি মাসের বিল প্রতি মাসেই পরিশোধ করতে হবে। এক মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। নতুন বিদ্যুৎ আইনে পিডিবির প্রকৌশলীদের অভিযানে সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ জরিমানা আদায়ে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে বলে জানান পিডিবির এক নির্বাহী প্রকৌশলী। তিনি আজাদীকে বলেন, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে আমরা নিয়মিত অভিযান করছি। সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছি। জরিমানা আদায় করছি। বিদ্যুৎ আমাদের মূল্যবান সম্পদ, এর ব্যবহারে যেমন সচেতন হতে হবে তেমনি বিল পরিশোধেও সচেতন হতে হবে। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখার কোনো নিয়ম নেই। প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
