ডিসি হওয়ার জন্য আন্দোলনে অংশ নেওয়া ১৭ উপসচিবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার বিকালে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ বিষয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মোখলেস উর রহমান বলেন, কিছুদিন আগে আমাদের মন্ত্রণালয়ে কাজের একটা স্থবিরতা আসছিল। সেটার জন্য এক সদস্যের একটা কমিটি করা হয়েছিল। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব, উনার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। সংক্ষেপে যদি বলি, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। সাক্ষী প্রমাণ পাওয়া গেছে। ১৭ জনকে তিনি ইন্টারোগেট করেছেন। তিনটা পর্যায়ে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
কমিটির সুপারিশ জানিয়ে তিনি বলেন, আটজনের বিষয়ে বলা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে প্রসিডিউর অনুযায়ী গুরুদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। চারজনকে বলা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে এবং আমাদের কিছু বিধি বিধান অনুযাযী লঘুদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। আর পাঁচজনের ব্যাপারে বলা হয়েছে তিরস্কার বা সাবধান করা যেতে পারে। এটা হচ্ছে আমাদের ফাইন্ডিংস। খবর বিডিনিউজের।
জনপ্রশাসন সচিব বলেন, আপনারা জানেন একজন সরকারি কর্মকর্তা এই সমস্ত বিষয়গুলো যখন ফেইস করে, কতগুলো বিষয় আছে, অনেকগুলো স্টেজ আছে, এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। একটা পর্যায়ে দেখা যায়, অনেকের ইনভলবমেন্ট ছিল অথবা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন, এ বিষয়গুলো আমরা দেখি।
ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর মাঠ প্রশাসনেও ব্যাপক রদবদল আনে অন্তর্র্বর্তী সরকার। এর ধারাবাহিকতায় ৫৯ জেলায় নতুন কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে দিনভর হট্টগোল করেন আগের সরকারের আমলে বঞ্চিত উপসচিবরা। শেষ পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন বাতিলের আশ্বাসে তারা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কার্যালয় ত্যাগ করেন।
নতুন দায়িত্ব পাওয়া ৫৯ জন জেলা প্রশাসকের মধ্যে আটজনকে পরদিনই প্রত্যাহার করে নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে চার জনের কর্মস্থল বদলে দেওয়া হয়। আর একজন উপসচিবকে করা হয় ওএসডি। হট্টগোলের ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয় কমিটি।
এ ধরনের ঘটনা কঠোর হস্তে দমন করা হবে জানিয়ে মোখলেস উর রহমান বলেন, জাতি এবং মানুষ জানতে চায়, আমি ডিসি হতে পারি নাই, মন্ত্রণালয়ে এরকম একটা আন্দোলন এটা কেউ কিন্তু ভালোভাবে নেয়নি। আমাদের সিনিয়র কলিগরা নেয়নি, আমাদের কলিগরা নেয়নি, আমাদের জুনিয়র কলিগরা নেয়নি। সত্যি কথা বলতে গেলে জনগণ ভালোভাবে নেয়নি।
তদন্ত কমিটি কয়জনকে ডেকেছিল জানতে চাইলে সচিব বলেন, আমাদের একজন যুগ্ম সচিব ছিলেন, তাকে সাথে সাথে সিলেটে বদলি করা হয়েছে, উনি কিছু ওভার রিয়েক্ট করেছিলেন, উনাকে বদলি করা হয়েছে। আমরাতো অ্যাক্ট করব, রিয়েক্ট করব, কিন্তু ওভার রিয়েক্ট করতে পারি না। এই জন্য নিয়মের বাইরে কেউ যদি কিছু করে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে যে ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাদের নাম এই মূহূর্তে প্রকাশ করতে চাননি জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব।