দুর্ঘটনার সম্ভাব্য দুটি কারণ জানালেন বিএসসির এমডি

আজাদী প্রতিবেদন

| মঙ্গলবার , ১ অক্টোবর, ২০২৪ at ৪:৪৩ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক বলেন, আজ (গতকাল) সকালে বিএসসির জাহাজে বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডে তিনজন নিহতের ঘটনায় বিএসসির নির্বাহী পরিচালক (প্রযুক্তি) ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ইউসুফকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে বিএসসি। দুর্ঘটনার কারণ নির্ধারণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধ করতে কী করণীয়তা নির্ধারণ করে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিবে তদন্ত কমিটি। এছাড়া ৫ সদস্য বিশিষ্ট আরো একটি কমিটি গঠন করেছে বিএসসি। একজন ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার পর্যায়ের কর্মকর্তাকে এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। নিহতদের দাফন, সৎকার, ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ এ সংক্রান্ত বিষয় সমাধান করা হবে। গতকাল বিকেলে বিএসসির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। দুর্ঘটনার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন বিস্তারিত বললে তদন্তে বিঘ্ন ঘটবে। তবুও আপনাদের জানার জন্য বলছি। তারা তিনজন রশি অ্যাডজাস্ট করছিল। নিচের পেইন্ট স্টোর থেকে গ্যাস নির্গত হতে পারে। ইলেকট্রিক শর্টসার্কিট হতে পারে। তদন্ত টিম সবার সঙ্গে কথা বলে, পর্যবেক্ষণ করে প্রকৃত কারণ বের করতে পারবে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল জাহাজে। তখন পাওয়ার সিস্টেম বন্ধ হয়ে গেছে। তাছাড়া এত বড় অগ্নিকাণ্ড জাহাজের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সম্ভবপর ছিল না। আজ (গতকাল) জাহাজে বড় কোনো মেরামত কাজ হচ্ছিল না। ছোটখাটো সমস্যা প্রায়ই সমাধান করি। সিঙ্গেল মুরিং পাইপলাইন প্রকল্প চালু হলে অপরিশোধিত তেল লাইটারিংয়ের প্রয়োজন হবে না।

বিএসসির এমডি বলেন, বিএসসির বহরে বর্তমানে ৭টি জাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে ৫টি সমুদ্রগামী, যা বহির্বিশ্বের পণ্য পরিবহনে কাজ করছে। বাকি দুটি লাইটার জাহাজ। লাইটার জাহাজ দুটি ১৯৮৭ সালে ডেনমার্কে তৈরি করা হয়েছে। অপারেশনের শুরু থেকে লাইটারেজ দুইটি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) জন্য আমদানি করা ক্রুড অয়েল বন্দরের বহির্নোঙর থেকে খালাস করে সেগুলো ইস্টার্ন রিফাইনারিতে নিয়ে আসে।

একটি জাহাজের লাইফটাইম সর্বোচ্চ ২৫ বছর ধরা হলেও ৩৭ বছরের পুরনো জাহাজ দিয়ে তেল পরিবহনের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসসির এমডি বলেন, জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছিল বলে আমরা মেরামত করে বাংলার জ্যোতিসহ লাইটার জাহাজ দুটি সচল রাখছিলাম। পুরনো হওয়ায় প্রতিদিনই আমাদের ওয়ার্কশপ থেকে লোকজন পাঠানো হয় জাহাজে। সমুদ্রগামী ৫টি জাহাজে যতটা ইফোর্ট দেওয়া হয় তার চেয়ে বেশি দেওয়া হয় পুরনো লাইটার জাহাজ দুটিতে। ১৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণ সক্ষমতার বাংলার জ্যোতি জাহাজটিতে ১১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল ছিল। এর মধ্যে কিছু তেল খালাস হয়েছিলো। যদি জাহাজে থাকা তেলে আগুন লেগে যেত তাহলে ভয়াবহ হতো। জাহাজে ফাটল দেখা দিলে বিপদ হতো। পরিবেশ বিপর্যয় ঘটলে আন্তর্জাতিক ইস্যু হয়ে যেতে পারত। আগুন নেভানোর পর দুর্ঘটনাস্থলে গ্যাস আছে কিনা আমরা দেখেছি। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম আইসোলেটেড করে রাখা হয়েছে। তেল খালাসের পর জাহাজটি টাগ বোটের সহায়তায় ডকে নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএকটি নতুন জাতির স্বপ্ন দেখছেন ড. ইউনূস
পরবর্তী নিবন্ধঅয়েল ট্যাংকারে বিস্ফোরণ, আগুন