যে মাটি থেকে এককালে নুরুলদীন জাগো বাহে কোনঠে সবাই বলে জেগে ওঠার উদাত্ত আহবান করছিলেন। সেখান থেকেই নতুন বাংলাদেশের বীজ বপন করেছেন আবু সাঈদ। মফস্বল এলাকায় গরীব ঘরে জন্ম নেওয়া আবু সাঈদকে ঠিক দেড়মাস আগে কয়জনইবা চিনত? সেই আবু সাঈদের বীরত্বের কাহিনি বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে সুদূর আমেরিকায় জাতিসংঘের মঞ্চে আলোচনা হচ্ছে। আবু সাঈদ আলোকবর্তিকা হয়ে দ্রোহের আগুন ছড়িয়ে দিয়েছে ওয়াসিম থেকে মুগ্ধের শরীরে। জুলাই ১৬ তারিখ দুপুরবেলা কৃষ্ণচূড়ার ডাল লাল করবার প্রত্যয় নিয়েই সম্ভবত একজন তরুণ দুইহাত প্রসারিত করে বুক টানটান করে দাঁড়ালেন গুলির সামনে। ক্ষমতাসীনদের দাসে পরিণত হওয়া পুলিশ গুলি ছুড়লেন আবু সাঈদের বুকে। গুলিতে ঝাঁঝরা শরীর লুটিয়ে পড়ল মাটিতে। আবু সাঈদের শরীর মাটিতে লুটিয়ে পড়ার সাথে সাথেই লুটিয়ে পড়ছিল ১৬ বছরের জালিমের মসনদ। বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছে আওয়ামী শাসনের অন্ধকার অধ্যায় হতে। শহীদ আবু সাঈদের বুক পরিণত হয় বাংলাদেশের হৃদয়ে। রাবিতে শামজ্জোহা এবং রংপুরে নুরুলদীন যে দ্রোহ কাব্যের রচয়িতা হিসেবে উজ্জ্বল হয়ে আছে বিপ্লবের ইতিহাসে। তাদের নামের পাশে সংযুক্ত হয় আবু সাঈদের নাম। আবু সাঈদও প্রেরণা জোগাবে, শক্তি জোগাবে, স্বপ্ন জাগাবে শতাব্দীর পর শতাব্দী। নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার, ক্ষয় নাই। কবিতার লাইনগুলোর প্রতিচ্ছবি হয়ে অমর হয়ে থাকবে আবু সাঈদ।