নগরীর ডিসি রোডের মিয়ার বাপের মসজিদ এলাকায় চট্টগ্রাম আদালতের শিক্ষানবিশ আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন হত্যা মামলা সিআইডিকে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল পিবিআই’র দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বাদী পক্ষের দায়ের করা নারাজি পিটিশনের উপর শুনানি শেষে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম এ নির্দেশ দেন। গত ৪ জুলাই শিক্ষানবিশ আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন হত্যা মামলায় পিবিআই উক্ত চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
বাদীর আইনজীবী নওশেদ আলী আজাদীকে বলেন, মামুন খুনের মামলায় তদন্ত সংস্থা পিবিআই আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট না দিয়ে প্রভাবিত হয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ভিকটিম মামুন আত্মহত্যা করেছেন। অথচ সুরতহাল রিপোর্ট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মামুনের শরীরের মাথা, পিঠসহ অসংখ্য স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এসব কারণে আমরা পিবিআইয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের উপর নারাজি পিটিশন দাখিল করেছি। আদালত সেটি গ্রহণ করে সিআইডিকে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ভিকটিম মামুনের হত্যাকারী তার স্ত্রী তানিয়া সুলতানা লিজা কারাগারে আছেন। ঘটনার পরপর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। ২০২৩ সালের ১৯ এপ্রিল রাতে নগরীর ডিসি রোডের মিয়ার বাপের মসজিদ এলাকার ভাড়া বাসায় মামুনের মৃত্যু হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল। অণ্ডকোষ থেতলানো পাওয়া যায়। তিনি চকরিয়ার উত্তর লক্ষ্যারচর এলাকার মো. জামাল উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় মামুনের ভাই মো. ইসকান্দার মির্জা বাদী হয়ে নগরীর চকবাজার থানায় মামুনের স্ত্রী লিজার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, এক বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেন মামুন ও লিজা। ডিসি রোডের মিয়ার বাপের মসজিদ এলাকার রফিক সওদাগরের বিল্ডিংয়ের ৬ তলায় বসবাস শুরু করেন। পরে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। লিজা পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে তিন মাস আগে মামুনকে মারধর করে লিজা। পরে দুই পরিবারের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান করা হয়। এজাহারে মো. ইসকান্দার মির্জা লিখেন, রাতে লিজা ফোন দিয়ে জানায়, মামুন অজ্ঞান হয়ে গেছে। অবস্থা খুব খারাপ। হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। কী হয়েছে তা জানতে চাইলে একেক সময় একেক কথা বলে। একপর্যায়ে মামুনকে পার্কভিউ হাসপাতালে নিয়ে যায় লিজা। কিন্তু এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করায় ভর্তি নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে আমি সেখানে গিয়ে মামুনের লাশ পড়ে থাকতে দেখি। একপর্যায়ে সেখান থেকে মামুনের লাশ চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।