সীতাকুণ্ডে সোনাইছড়িস্থ এস এন করপোরেশন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডকে বিস্ফোরণের ঘটনায় ২৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি আগামী ৩ মাসের জন্য প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর বিস্ফোরণের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রেক্ষিতে ১৮ সেপ্টেম্বর শাস্তি ও জরিমানার পাশাপাশি ২০ দফা সুপারিশ করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়া অধিশাখা।
জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়া অধিশাখার উপসচিব সঞ্জয় কুমার ঘোষ স্বাক্ষরিত চিঠির তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের প্রতি পরিবারকে মোট ৭ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং রুলস, ২০১১ এর ধারা ৪৫.৩ এর অধীনে ৫ লাখ টাকা এবং শ্রম আইনের বিধান অনুযায়ী অতিরিক্ত ২ লাখ টাকা। এছাড়া এস এন করপোরেশনকে জরিমানার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। শিপব্রেকিং ও রিসাইক্লিং রুলস, ২০১১ এর ধারা ৪৫.৩ অনুযায়ী ১০ লাখ টাকা, ৪৬.৩ ধারা অনুযায়ী ১ লাখ টাকা, ৪৬.৯ ধারা অনুযায়ী ১০ লাখ এবং ৪৬.১১ ধারা অনুযায়ী ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি তিন মাসের জন্য ইয়ার্ড বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
একইসঙ্গে আহত শ্রমিকদের ১২ মাসের বেতনসহ ক্ষতিপূরণ এবং তাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত সব চিকিৎসা ব্যয় ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণ বহন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে ২০ দফা সুপারিশ করেছে মন্ত্রণালয়।
সুপারিশগুলির মধ্যে ছিল গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা ব্যবস্থা যেমন– গরম এবং ঠাণ্ডা কাজের একযোগে পরিচালনা নিষিদ্ধ করা, ট্যাঙ্ক, ইঞ্জিন রুম এবং পাম্প রুম কাটার সময় সঠিক বায়ু চলাচল নিশ্চিত করা এবং হট ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করার আগে গ্যাস খালি করা। চিঠিতে ইয়ার্ডকে প্রশিক্ষিত এবং অভিজ্ঞ কর্মী নিয়োগ, জাহাজ কাটার পরিকল্পনা কঠোরভাবে অনুসরণ করার এবং জাহাজের উচ্চ–ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় কাজ করার সময় যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর এসএন করপোরেশন শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে বিস্ফোরণের ঘটনায় ১২জন দগ্ধ হয়। এদের মধ্যে ৬ শ্রমিকের মৃত্যু হয় এবং ৬জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।