উচ্চশিক্ষার্থে ব্রিটেনে অবস্থানকালে ব্রিটিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স লাভে সমর্থ হই। এই লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়ার এবং পরবর্তীতে ব্রিটেনের রাস্তায় ড্রাইভিং এর আলোকে আমি বাংলাদেশের ট্টাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নকল্পে কিছু প্রস্তাবনা রাখতে চাই। এই প্রস্তাবনা গুলোর মধ্যে কিছু খুবই কম সময়ে ও স্বল্প খরচে বাস্তবায়নযোগ্য। কিছু প্রস্তাবনা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সাপেক্ষ। আমি আমার এই লিখনীতে সহজে অনুকরণীয় প্রস্তাবনাসমূহ উল্লেখ করছি :
১. বড় বড় মোড়/জাংশন (যেমন, চট্টগ্রামের জিইসি মোড়)-এর যেসব মাধ্যমে যেসব গাড়ি যাতায়াত করে তাদেরকে ব্রিটেনের মত, মোড়ের বেশ আগে থেকে ডানে যাওয়ার গাড়ি সর্বডানের লেইনে অথবা বামে যাওয়ার গাড়ি সর্ববামের লেইনে আসার ব্যাপারে নির্দেশনামূলক সাইন রাস্তায় দেওয়া এবং ট্রাফিক পুলিশদেরও এই ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া। মোড়ে যেসব গাড়ি সোজা যাবে (যেমন: দামপাড়া থেকে যেসব গাড়ি ২নং গেইট যাবে জিইসি হয়ে) তারা যথাযথ লেইনে থাকবেন। ডানের ও বামের লেইনের ফ্রী ফ্লো থাকলে সোজা যাওয়ার গাড়িগুলো যেকোন লেইন ব্যবহার করতে পারবে। ২ নং গেট মোড়েও একই সিস্টেম ফলো করলে কোন জ্যামই হবে না। এই ধরনের গোল চত্বর টাইপের মোড়ে যার যার ডান দিক থেকে আসা গাড়িকে সবাই আগে যেতে দেবে। এই পদ্ধতিতে ছোট বড় যেকোন মোড়ের জটলা কোন ট্রাফিক পুলিশের সাহায্য ছাড়াই এড়ানো সম্ভব একটু সচেতনতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে। এই নিয়মের কারণে ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনে খুব সরু রাস্তায় ও বড় বড় ডাবল ডেকার বাস ও অন্যান্য যানবাহন চললেও, ট্রাফিক পুলিশ ছাড়াই যানজটমুক্ত থাকে। ইউটিউবে এইসব ব্যবস্থাপনার ভিডিও ড্রাইভার ও ট্রাফিক পুলিশদের দেখানো যেতে পারে।
২. ব্রিটেনের ড্রাইভিং লাইসেন্স এর পরীক্ষা একটি পরিপূর্ণ পরীক্ষা যেখানে এসব নিয়মকানুনের ব্যবহারিক প্রয়োগ দেখে ড্রাইভারকে লাইসেন্স দেওয়া হয়। আমাদের দেশের লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়াটি এমন হওয়া দরকার যেখানে একজন ইনস্ট্রাকটরের উপস্থিতিতে লাইসেন্স প্রার্থীকে মূল সড়ক/ মহাসড়কে ৩০ মিনিটের মতো গাড়ি চালিয়ে যথাযথ দক্ষতা প্রমাণ করে লাইসেন্স নিতে হবে। ইনষ্ট্রাকটরদেরও টেষ্টের মাধ্যমে ব্রিটেনের মত বাছাই করতে হবে। সরকার চাইলে ইজঞঅ তেই ইনস্ট্রাকটরদের জন্যে একটি ইনস্টিটিউট করা যেতে পারে।
বাংলাদেশের ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নকল্পে আমার নিজের কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। যথাযথ যাচাই–বাছাই এর মাধ্যমে যদি এর কিছু অংশও আমার দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নের কাজে লাগে সেটাই হবে বিশাল প্রাপ্তি।