ফ্লাইওভারের নিচে এক যুবকের দুই হাত দুটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। এ সময় ‘মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা’ গান গেয়ে তাকে মারধর করছেন কয়েকজন তরুণ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত শনিবার রাতে ছড়িয়ে পড়া ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিওর দৃশ্য এটি।
ভিডিওটি দেখে গতকাল অনুসন্ধান শুরু করে পুলিশ। এরপর নিশ্চিত হয়, ওই তরুণের নাম মো. শাহাদাত হোসেন (২৪)। গত ১৪ আগস্ট রাতে নগরের প্রবর্তক মোড়ের অদূরে বদনা শাহ মাজারের বিপরীত এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। পুলিশের ধারণা, বেঁধে মারধর করায় মৃত্যু হয়েছে তার। এছাড়া ভিডিওতে তাকে মারধর করতে দেখা যাওয়া স্থানটি আকতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে ২ নম্বর গেট মোড় এলাকার।
নিহত শাহাদাত নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানার পাঁচবাড়িয়া ইউনিয়নের নদনা গ্রামের মিয়া জান ভূঁইয়াবাড়ির মৃত মোহাম্মদ হারুনের ছেলে। থাকতেন নগরের কোতোয়ালী থানাধীন বিআরটিসি এলাকার বয়লার কলোনিতে। তিনি নগরের ফলমন্ডির একটি দোকানে চাকরি করতেন।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ রইছ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ভিডিওটি নজরে আসার পর জানতে পারি মারধরের শিকার যুবক হচ্ছেন শাহাদাত হোসেন। তার স্ত্রীকে থানায় ডেকে পাঠাই। থানায় এলে ওই ভিডিও তাকে দেখানো হলে ভিডিও চিত্রে দেখা যাওয়া যুবকটি তার স্বামী বলে শনাক্ত করেন। দোষীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, ১৪ আগস্ট শাহাদাতের লাশ উদ্ধারের পর তার বাবা হারুন পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এজাহারে বলা হয়, ১৩ আগস্ট বেলা ২টার দিকে কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন শাহাদাত। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফোন করলে কিছুক্ষণের মধ্যে বাসায় চলে আসবেন বলে তার স্ত্রী শারমিন আক্তারকে জানান। গভীর রাত পর্যন্ত স্বামী বাসায় ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি করেন শারমিন। এ সময় শাহাদাতের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে ১৪ আগস্ট রাত ৯টার দিকে নগরের পাঁচলাইশ থানা পুলিশ প্রবর্তক মোড় থেকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে শাহাদাত হোসেনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। একইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফেইসবুকের মাধ্যমে শাহাদাতের মরদেহ বদনা শাহ মাজারের সামনে পড়ে থাকার দৃশ্য দেখতে পান শারমিন। পরে চমেক হাসপাতাল এসে স্বামীর মরদেহ শনাক্ত করেন তিনি।