অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধরী বলেছেন, পাহাড়ের ঘটনায় আমরা একটা উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করব আমাদের সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করার পর।
আইনশৃঙ্খলা কোনো অবস্থাতেই অবনতি হতে দেওয়া যাবে না। আমি আপনাদের সবার সহযোগিতা চাচ্ছি। যারা আইনশৃঙ্খলা অবনতি করবে তাদের কোনো অবস্থায় আমরা ছাড় দেব না বলেও হুঁশিয়ারি দেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।
শুক্রবার রাঙামাটি শহরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার পর শনিবার দুপুরে রাঙামাটির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে একথা জানান।
শনিবার বেলা ১২টার দিকে রাঙামাটি সেনানিবাসের প্রান্তিক হলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সরকারি, সামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তারা ছাড়াও পাহাড়ের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্টজনরা অংশগ্রহণ করেছেন।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ভবিষ্যতে যদি তারা আবার চেষ্টা করে, তাদের হাত আমরা ভেঙে দেব। আপনাদের কাছে বার বার অনুরোধ করব, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন উন্নতি হয়।
আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করবেন। প্রশাসনকে সহযোগিতা করবেন। জনগণকে বোঝাবেন যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অটুট থাকে, ভালো থাকে। আপনাদের সকলের সহযোগিতা আমি কামনা করি।
এসময় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেন, পাহাড়ে আসার সময় দেওয়ালে দেওয়ালে যে গ্রাফিতি দেখেছি, গ্রাফিতির যে বার্তা তা আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে দেখতে চাই। এখানে সম্প্রীতি থাকবে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা সবাই একসঙ্গে থাকব, একসঙ্গেই কাজ করব। আজকের বৈঠকে যে বক্তব্যগুলো এসেছে, সবার একই কথা আমরা সম্প্রীতি চাই। কেন জানি কোথাও একটা ছন্দপতন হচ্ছে। ছন্দপতনের ব্যাপারে প্রত্যেকের মুখে একটা শব্দ উচ্চারিত হয়েছে ষড়যন্ত্র। বাহিরে থেকে একটা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে; আমাদের এই সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য। সেই জন্য দাবি আসছে একটা কমিশন বা তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সুষ্ঠু ব্যবস্থা করা। দোষীদের যেন আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়।
বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, বাংলাদেশের পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম, সেনাবাহিনীর রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার, রাঙামাটির জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, পুলিশ সুপার, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন সদস্য নিরূপা দেওয়ান, বাঙালিভিত্তিক সংগঠনের নেতাসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে উপদেষ্টাগণ খাগড়াছড়ি জেলায় যাবেন।