ওয়াল্টার স্কট (১৭৭১–১৮৩২)। স্কটল্যান্ডের বিখ্যাত ঐতিহাসিক উপন্যাস রচয়িতা এবং কবি। পুরো ইউরোপ জুড়ে তার সময়ে তিনি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। ওয়াল্টার স্কট ১৭৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি রূপকথা, গান, শেক্সপিয়ার, গল্প, এশীয় কল্পকাহিনি এবং লোককথার ভক্ত পাঠক ছিলেন। ১৭৭৮–১৭৮২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এডিনবরা উচ্চ বিদ্যালয়ে কাটান এবং ১৭৮৩ খ্রিষ্টাব্দে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কিন্তু ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে তিনি পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। তিনি বাসাতে থেকেই একজন শিক্ষক রেখে ইংরেজি সাহিত্য চর্চা করতে থাকেন। এসময় তিনি বাবার জন্য নবিস হিসেবে কেরানিগিরি করতেন। পরবর্তী ৯ বছরের বিভিন্ন সময়ে স্কট এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা ও আইনের ওপর বিভিন্ন ক্লাস করেন। তিনি বাবার আইন ব্যবসায় নবিসের কাজকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছিলেন এবং ব্যবসার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করতেন। ১৭৯২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আইনজীবী হিসেবে উত্তীর্ণ হন এবং স্কটিশ বারে প্র্যাকটিস করার সুযোগ পান। ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সেলকার্কশারের শেরিফ পদে নিযুক্ত হন এবং টুইড নদীর তীরে অ্যাশস্টিল শহরে বাস করা শুরু করেন। আইনের মৌসুমের সময় কেবল তিনি এডিনবরাতে ফিরতেন। স্কটের প্রথম প্রকাশিত রচনাবলীর মধ্যে আছে ‘মিন্সট্রিলসি অব স্কটিশ বর্ডার’ (১৮০২–১৮০৩) নামের জনপ্রিয় স্কটিশ গানের একটি তিনখণ্ড সংগ্রহ; বইটি লোকসাহিত্যবিদ হিসেবে তার সামর্থ্যের পরিচয় দেয়। এরপর তিনি ১৮০৫ খ্রিষ্টাব্দে ‘দি লে অব দ্যা লাস্ট মিন্সট্রিল’ ১৮০৮ খ্রিষ্টাব্দে ‘মারমিয়ন’, এবং ১৮১০ খ্রিষ্টাব্দে ‘দি লেডি অব দ্যা লেক’ কাব্যগ্রন্থগুলি প্রকাশ করে সমগ্র ব্রিটেনে কবি হিসেবে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। ১৮১২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পোয়েট লরিয়েট–এর পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। এরপর স্কট গদ্য রচনায় মনোনিবেশ করেন। তার প্রথম উপন্যাস ছিল ওয়েভার্লি। এর পরের ১০ বছর স্কট বেনামে আরও ২০টি উপন্যাস রচনা করেন। কিন্তু বহু পাঠক এগুলিতে স্কটের লেখার ধরন ধরতে পারেন। আজও স্কটের লেখা সেই বেনামী উপন্যাসগুলোকে তার ওয়েভার্লি উপন্যাস হিসেবে ধরে নেয়া হয়। ১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দের ২১শে সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।