রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে দেশের প্রধান অবকাশযাপন কেন্দ্র কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে গত ২ মাস ধরে চলা মন্দাকাল অবশেষে কেটে গেছে। হাজার হাজার পর্যটকের আনাগোনায় আবারও স্বরূপে ফিরেছে কক্সবাজার। গতকাল শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনে কক্সবাজারে অন্তত অর্ধলক্ষাধিক পর্যটক এসেছে বলে ধারণা করছেন হোটেল মালিকরা।
তারা জানান, গত জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও কারফিউর কারণে দেশের প্রধান অবকাশযাপন কেন্দ্র কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে ধস নামে। এরপর থেকে সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিনেও পর্যটকশূন্য ছিল কক্সবাজার। অথচ আন্দোলন শুরুর আগের ছুটির দিনগুলোতে অন্তত ২০–২৫ হাজার পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসত। কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার কামাল বলেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে গত ২ মাস দেশের প্রধান অবকাশযাপন কেন্দ্র কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে চরম মন্দাকাল গেছে। তবে গত সপ্তাহ থেকে হাজার হাজার পর্যটকের আনাগোনায় আবারও স্বরূপে ফিরেছে কক্সবাজার। আজ (গতকাল) সরকারি ছুটির দিনেও কক্সবাজারে অর্ধলক্ষাধিক পর্যটক এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম সার্ভিসেস এসোসিয়েশন কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার হোটেল–মোটেল–গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদারও একই ধারণা পোষণ করে বলেন, শুক্রবার কক্সবাজারের হোটেলগুলোতে গড়ে ৫০ ভাগ কক্ষ ভাড়া হয়েছে। এটা আশাব্যঞ্জক। এরআগে ২ মাস ধরে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প চরম মন্দা মৌসুম পার করে। তবে সাগরপাড়ের তারকা হোটেল কক্সটুডে’র সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবু তালেব বলেন, দেশের আইন শৃক্সখলা পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়ায় মানুষের মাঝে চাপা আতংক বিরাজ করছে। ফলে মানুষ নির্ভয়ে বেড়াতে আসছে না। তিনি জানান, শুক্রবার তাদের হোটেলে মাত্র ৩৫ ভাগ কক্ষ বুকিং হয়েছে।
কক্সবাজার সাগরপাড়ের আরেক তারকা হোটেল সী–গালের প্রধান নির্বাহী ইমরুল ছিদ্দিকী রুমী জানান, তাদের হোটেলে শুক্রবার প্রায় ৫০ ভাগ কক্ষ ভাড়া হয়েছে। কক্সবাজার সৈকতের বিচকর্মী সুপারভাইজার মাহবুব আলম জানান, শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজার শহর সংলগ্ন সৈকতে লাখো পর্যটকের উপস্থিতি দেখা গেছে। এরমধ্যে অর্ধেকই কক্সবাজার জেলা ও আশেপাশের এলাকা থেকে বেড়াতে আসা লোক বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, সাধারণত শীতকালীন পর্যটন মৌসুমকে পিক সিজন এবং বর্ষাকালীন সময়কে অফসিজন বা মন্দা মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। এরপরও বর্ষাকালে সরকারি ছুটির দিনে ২০ থেকে ২৫ হাজার এবং অফিস খোলার দিনে ৫ থেকে ১০ হাজার পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসেন। তবে প্রতিবছর দুই ঈদ এবং থার্টিফার্স্ট’র ছুটিতে কক্সবাজারে সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে। এসময় হোটেল–মোটেলে শতভাগ রুম বুকিং থাকে। বর্তমানে কক্সবাজার শহরের ৫ শতাধিক আবাসিক হোটেল ও কটেজে প্রায় দেড় লাখ পর্যটকের রাতযাপনের সুবিধা রয়েছে। এসব হোটেলে প্রায় ২০ হাজার কর্মী নিয়োজিত রয়েছে।