চট্টগ্রাম কাস্টমসের অনলাইন নিলামে (ই–অকশন) ১৬ কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৪ কোটি ১ লাখ টাকা। সীতাকুণ্ডের শীতলপুরের যমুনা শিপ ব্রেকার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান এই দর হাঁকে। এছাড়া ৫ কোটি টাকা মূল্যের ল্যান্ডক্রুজার গাড়ির সর্বোচ্চ দর উঠে ২ কোটি ১৩ লাখ টাকা। ময়মনসিংহের ভালুকার পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান হ্যারি ফ্যাশন সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গতকাল বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনলাইন দরপত্র গ্রহণ করেন। গাড়িসহ ৪৫ লটের মধ্যে ২৬ লটে দরপত্র জমা পড়ে ৬৯টি। এরমধ্যে শুধু ল্যান্ডক্রুজার গাড়িতে দরপত্র পড়ে ১৪টি এবং মার্সিডিজ বেঞ্জে দরপত্র জমা পড়ে ৪টি। মার্সিডিজ বেঞ্জের দরদাতা হল যমুনা শিপ ব্রেকার্স, মেসার্স মাসুম এন্টারপ্রাইজ, একেএম নিট ওয়্যার লিমিটেড এবং মো. নাহিদ হাসান। অপরদিকে ল্যান্ডক্রুজারের দরদাতারা হল এসএ ট্রেডিং অ্যান্ড কোম্পানি, এনায়েত রশিদ, বাংলা কারস, মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, মেসার্স হোসাইন অ্যান্ড হাসান ট্রেডিং, মেসার্স মাসুম এন্টারপ্রাইজ, বিল্ড বেস্ট, মো. শামিম ইসলাম, হ্যারি ফ্যাশন লিমিটেড, ম্যাঙ্মি অ্যাসোসিয়েটস, শাহ আমানত ট্রেডিং, এসএইচ এন্টারপ্রাইজ, নুরুল আজিম ও মো. নাহিদ হাসান।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ৪৫ লট পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিঙ, লেডিস সু সোল, সিরামিকের ফুলদানি, ক্র্যাফ্ট কার্টন, পিভিসি শিট, গার্মেন্টস এঙেসরিজ, সোডিয়াম সালফেট, ব্যবহৃত কম্বল, বই, কম্বলের কাপড়, হুইট ব্রান ক্রপ, মাল্টি গ্রেড ইঞ্জিন অয়েল, পাইনাপল জুস, ম্যাঙ্গু ন্যাক্টার, আপেল জুস, স্ট্রবেরি অ্যান্ড ব্যানানা জুস, মার্সিডিজ বেঞ্জ ও ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি। গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে কাস্টমসের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে অনলাইনে দরপত্র গ্রহণ শুরু হয়। সর্বশেষ গতকাল বিকেল বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিডাররা দরপত্র দাখিল করেন। তবে আগে দরপত্র দাখিলের তিন থেকে চারদিনের মধ্যে দরদাতারা নিলাম মূল্যের ১০ শতাংশ পে অর্ডার জমা দিতেন। এবার সেই নিয়ম পরিবর্তন করে দরপত্র দাখিলের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পে অর্ডার জমা দেয়ার সময় বেঁধে দেয়া হয়। এতে নিলাম শেষ হওয়ার সাথে সাথেই সর্বোচ্চ দরদাতা কে হয়েছেন, সেটি জানা যাচ্ছে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ–কমিশনার সেলিম রেজা জানান, বিলাসবহুল মার্সিডিজ বেঞ্জ–ল্যান্ডক্রুজারসহ ৪৫ লট পণ্যের অনলাইন নিলাম সম্পন্ন হয়েছে। এখন নিলাম কমিটি যাচাই বাছাই করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিক্রয় অনুমোদন দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।