পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশ পুনর্গঠনে সব রাজনৈতিক পক্ষের মধ্যে জাতীয় ঐক্য তৈরিতে কাজ করতে চায় নবগঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটি। গতকাল শনিবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর–রুনি মিলনায়তনে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক কমিটি এমন অভিপ্রায় তুলে ধরে। কমিটির তরফে বলা হয়, তারা এমন এক ঐক্য গঠন করতে চায়, যেই ঐক্যের উপর দাঁড়িয়ে শোষণহীন, বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক একটি বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমীন বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও আমাদের মধ্যে কোনো ইস্যুতেই জাতীয় ঐক্য নেই। সকল কিছু নিয়েই আমরা দ্বিধা–বিভক্ত। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের মতো প্রাথমিক রাষ্ট্রীয় কাজও এখানে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এখনও নূন্যতম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা তৈরি করতে পারেনি। পাঁচ বছর পর পর ক্ষমতা হস্তান্তর হবে কী প্রক্রিয়ায় তা নিয়েই এতদিনে কোনো ঐক্যে পৌঁছানো যায়নি। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ স্রেফ একটি সরকার নয়। এটি একটা ব্যবস্থা, যা বিভিন্ন আইন, প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক–সামাজিক–অর্থনৈতিক চর্চার মাধ্যমে টিকে থাকে। আমরা সেই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ চাই। খবর বিডিনিউজের।
সংবাদ সম্মেলনে কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন বক্তব্য রাখেন। রাষ্ট্র পুনর্গঠন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন বাংলাদেশের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত সফল করার লক্ষ্যে গত ৮ সেপ্টেম্বর আত্মপ্রকাশ করে এই নাগরিক কমিটি। ৫৫ সদস্যের এ কমিটির আহ্বায়ক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং সদস্য সচিব গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন। গতকাল শনিবার সংবাদ সম্মেলেন নাগরিক কমিটি ঘোষিত ৮ দফা বাস্তবায়নে শিগগির সারাদেশে জনসংযোগ কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
আহ্বায়ক নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন। তাদের যে স্বপ্ন সেটা বাস্তবায়ন করতে সময় দিতে হবে। সরকারকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি পর্যালোচনাও করতে হবে। তাদের বিষয়ে পর্যালোচনা আমরা জারি রাখব। তাদের কার্যক্রম শুরু হলে আমরা দেখব, এরপর কাজের পর্যালোচনা করে একটা সময় বেঁধে দিব।
সংগঠনের কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মুখপাত্র সামান্তা শারমীন বলেন, ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আরেকটি সুযোগ এসেছে। মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও অভিপ্রায়গুলোকে একত্রিত করেই আমরা আমাদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করব। নতুন বন্দোবস্তে আমরা সকল রাজনৈতিক পক্ষকে সাথে নিয়ে তৈরি করতে চাই। বন্দোবস্ত তৈরিতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মতামত নেওয়ার কাজও করবে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
নাগরিক কমিটি রাজনৈতিক দল নয়, তরুণদের নেতৃত্বে তৈরি হওয়া একটি প্ল্যাটফর্ম দাবি করে সামান্তা শারমিন বলেন, আমরা বাংলাদেশকে গড়তে তরুণসহ সকল নাগরিককে এই প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করতে চাই। রাষ্ট্র পুনর্গঠনে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে চাই। মানুষের গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবতায় পরিণত করতে চাই।