টানা দুইদিনের ভারী বৃষ্টিতে চকরিয়া–পেকুয়া উপজেলার অন্তত ১০টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নতুন করে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে তলিয়ে গেছে আমন আবাদ ও রকমারি সবজি ক্ষেত। এক মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় বারের মত টানা বর্ষণে কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
এদিকে পুরো চকরিয়া ও পেকুয়ার ২৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় ৭ লাখ মানুষ টানা ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। গতরাতে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল দুই উপজেলায়। এতে মানুষ অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকা ছাড়াও ফ্রিজে রক্ষিত খাদ্যপণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর–মানিকপুর, কাকারা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, বিএমচর, কোনাখালী ও বদরখালী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অন্তত ২০ হাজার লোক এরই মধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া আমন ধানের ক্ষেত ও রকমারি সবজি ক্ষেত বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।
মানকিপুর–সুরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক বলেন, মানিকপুর এলাকায় বৃষ্টিতে নিচু এলাকার অন্তত দুই শতাধিক ঘরবাড়ি পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়েছে।
বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ছালেকুজ্জামন বলেন, আমার ইউনিয়নের পহরচাঁদা, গোবিন্দপুর ও ডেইঙ্গাকাটা এলাকায় অধিকাংশ ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাদের নিরাপত্তা ও শুকনো খাবার বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে পেকুয়ার ৭ ইউনিয়নের মধ্যে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা, রাজাখালী, উজানটিয়া ও মগনামা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকার লোকজন চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অধিকাংশ চিংড়িঘের বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টিতে ডুবে গেছে ধান ও সবজির ক্ষেত। এই উপজেলার প্রায় ১০ হাজার লোক পানি বন্দি রয়েছে।
এছাড়া বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় মাতামুহুরী নদীতে উজানের পানি নামলে রাতে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম জানান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের এলাকার খোঁজখবর রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে ও নদীর তীরবর্তী এলাকায় অবস্থানরত লোকজনকে নিরাপদে সরে যেতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন সহায়তা করতে সবসময় প্রস্তত রয়েছে বলেও তিনি জানান।
বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা নিয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। কর্মকর্তারা কবে নাগাদ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল হতে পারে সেই বিষয়েও মন্তব্য করতে রাজি হননি।