বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজদের শক্তহাতে দমন করতে হবে। আমরা স্পষ্ট করতে বলতে চাই, এই ছাত্র নাগরিকদের পাওয়ার কিছু নেই। আমরা ত্যাগ করতে প্রস্তুত। আমাদের ছাত্র নাগরিক রাস্তায় এসে দাঁড়ায় পুলিশের সামনে বুক পেতে দেয়। যেসব চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজ রয়েছে তাদের বলতে চাই আমরা বুলেট-বোমা ভয় পাই না। আপনার সতর্ক হয়ে যান। আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে পুঁজি করে আপনারা যদি ভেবে থাকেন আবার দুর্নীতি শুরু করবেন, তবে ছাত্র-নাগরিক আপনাদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলবে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা সদরের এক হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায় শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিকের মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, কোন সরকারি অফিসে কাজে গেলে কাউকে এক টাকাও ঘুষ দিবেন না। কেউ ঘুষ দাবি করলে তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করবেন। বীর চট্টগ্রামবাসী সবসময় ধর্মভিরু। কিন্তু আমরা দেখেছি তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সবসময় ধর্মীয় গোঁড়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দাঁড়ি-টুপি যাদের রয়েছে তাদেরকে সবসময় প্রান্তিকীকরণ করা হয়েছে। আমরা সবাই জানি ‘চাঁটগাইয়া পোয়া, মাডিত পইল্লে লোয়া (চট্টগ্রামের ছেলে, মাটিতে পড়লে লোহা)। সুতরাং এই চাঁটগাইয়া পোয়াদেরকে আপনারা ভয় দেখাতে আইসেন না। আপনাদেরকে আবার সতর্ক করতে চাই, প্রভু চলে গেছে, কিন্তু প্রভুর দাসরা আমাদের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে।
তারা বিভিন্ন রূপে আমাদের মাঝে এসে আমাদের ইউনিটিকে ভাঙতে চাইবে। আপনারদেরকে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যেভাবে আমরা ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থকে সামনে রেখে একসাথে কাজ করেছি একইভাবে রাস্ট্র পুণগঠনে একসাথে কাজ করতে হবে।
পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আপনাদের মাঝে যারা খুনিদের দোসর ছিল তাদের আমরা জানি। সব পুলিশ কিন্তু বেনজীর না। সব পুলিশ ডিবি হারুন না। আমার বাবা, আমার ভাই তারাও কিন্তু পুলিশ। সুতরাং পুলিশদের আমরা সহযোগিতা করবো। রাষ্ট্র পুণগঠনের কাজে যারা বর্তমানে মাঠে রয়েছেন তাদেরকে আমরা প্রতিপক্ষ না ভেবে সহযোগি ভেবে রাষ্ট্র পুণগঠনের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব।
শিক্ষার্থী এইচ এম তামিম মির্জার সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় মোহাম্মদ সাকিব ও সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি। এই সময় বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শহীদ ইশমামুল হকের কবর জেয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাত করেন নেতৃবৃন্দ।