রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়েছে ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে তাদের এই সংঘর্ষের কারণে সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ওই এলাকায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়।
নিউ মার্কেট থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আমি শুনেছি প্রথম বর্ষের ছাত্রদের সাথে বড়দের কোনো বিষয় নিয়ে গণ্ডগোল হয়েছে। এর জেরে দুই কলেজের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। রাস্তায় থাকা বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের বোঝানো হচ্ছে জানিয়ে বিকাল সোয়া ৩টার দিকে তিনি বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। তবে কিছুটা উত্তেজনা আছে। খবর বিডিনিউজের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১২টার পর থেকে আইডিয়াল কলেজের সামনে উত্তেজনা দেখা দেয়। কেউ কেউ তখন বলছিলেন, ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী আইডিয়াল কলেজে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন। এরপর বেলা ২টার দিকে আইডিয়াল কলেজ থেকে ছাত্ররা বের হয়ে মিরপুর সড়কে যান। পাশাপাশি ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা বের হয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি পেরিয়ে সিটি কলেজের মোড়ে এলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় দুই পক্ষই পরস্পরের দিকে ইট পাটকেল ছোড়ে। অনেকের হতে লাঠিও দেখা যায়। এক পর্যায়ে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আইডিয়াল কলেজের সামনে গিয়ে কলেজের সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের মধ্যে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে তারা কোন কলেজের শিক্ষার্থী, তা জানা যায়নি। সংঘর্ষে আহত ১৮ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, সবাই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন। কেউ গুরুতর আহত নন।
সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করেছেন দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী বদিউজ্জামান বাদল বলেন, ঢাকা কলেজে অনুষ্ঠিত নবীনবরণ অনুষ্ঠানে আইডিয়াল কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী এসেছিল। সেখানে ঢাকা কলেজের কয়েকজনের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি হয়। পরে বিষয়টি মীমাংসা হলেও তারা ফিরে গিয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায়।
তবে কী নিয়ে হাতাহাতির সূত্রপাত হয়েছিল তা বলতে পারেননি এই শিক্ষার্থী। অন্যদিকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী মো. হোসাইন বলেন, আমাদের কলেজের দুই শিক্ষার্থী সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিতে গেলে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদেরকে মারধর করে। কেন তাদেরকে মারধর করা হলো, তা বলতে পারেননি তিনি।
নিউ মার্কেট জোনের পুলিশের সহকারী কমিশনার তারেক লতিফ বিকাল ৪টায় বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত। আমাদের সাথে সেনাবাহিনী রয়েছে। আমরা তাদের সাথে নিয়ে কাজ করছি। তিনি বলেন, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা দাবি করছে, তাদের কয়েকজন সহপাঠী নিখোঁজ আছে। যাদের নিখোঁজ বলা হচ্ছে, তাদের বা তাদের পরিবারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।