বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মিছিলে গুলি বর্ষণের দায়ে এক অস্ত্রধারীকে পটিয়া আদালত চত্বরে পেয়ে গণধোলাই দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী স্থানীয় ছাত্র-জনতা।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুুপুরে পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শিবির নেতার দায়ের করা মামলায় জামিন নিতে এসে ছাত্র-জনতার রোষানলে পড়ে গণপিটুনির শিকার হয় আসামি মো. রনি (৩৫)। সে পটিয়া পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণঘাটা এলাকার শফিউল আলম প্রকাশ বাটাম মিস্ত্রির পুত্র বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংহতি জানিয়ে পটিয়া আল জামিয়া মাদ্রাসার ছাত্ররা মিছিল বের করলে মো. রনি পটিয়ার পল্লী বিদ্যুতের সামনে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে নিয়ে মিছিলকারীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়।
এর আগে গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন চলাকালে পটিয়া সরকারী কলেজ গেটের সামনে অস্ত্রধারী রনি প্রকাশ্যে ছাত্রদের মিছিলে হামলা চালিয়ে ছাত্রদের আহত করে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে অস্ত্রধারী রনি আত্মগোপনে চলে যায়।
ছাত্র আন্দোলনে সংগঠিত ঘটনায় শিবির নেতা এনামুর রশিদের দায়ের করা মামলায় সে এজাহারনামীয় আসামি ছিল। মামলার বর্ণনায়ও তাকে অস্ত্রধারী রনি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
উক্ত মামলায় আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় রনিসহ কয়েকজন পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে রনিসহ ২২ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।
এ সময় আদালতে রনির উপস্থিতির খবর পেয়ে ছাত্র-জনতা আদালতের দিকে অগ্রসর হলে রনি সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার পথে পটিয়া সরকারী কলেজ মাঠে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের রোষানলে পড়ে।
এ সময় ছাত্র-জনতার হাতে সে গণপিটুনির শিকার হয়। এক পর্যায়ে ছাত্ররা তাকে পটিয়া থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরবর্তীতে ছাত্র-জনতা আদালতে গিয়ে আইনজীবী কক্ষে বিক্ষোভ করলে আইনজীবীরা জামিনের আবেদন প্রত্যাহার করে নেয়। যার ফলে আদালতের জামিন বাতিল হয়ে যায়। পরে ওই মামলায় রনিকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৌকির নামের এক শিক্ষার্থী জানান, রনি চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। আন্দোলনের শুরু থেকে এ রনি ছাত্র-জনতার উপর দফায় দফায় সশস্ত্র হামলা চালায়। গুলি বর্ষণ করে। তার হামলায় গুরুতর আহত ৭ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী এখনো পর্যন্ত চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গত ৪ আগস্ট গুলি বর্ষণের ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়।
পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জিআরও ফোরকান মিয়া বলেন, ছাত্র আন্দোলনে হামলার আসামি রনিসহ ২২ জন আসামি জামিন চাইলে ছাত্রদের বিক্ষোভের কারণে আইনজীবীরা জামিন আবেদন প্রত্যাহার করে নেন। ফলে প্রত্যেকের জামিন বাতিল হয়।