চবিতে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

প্রশাসন না থাকায় নানামুখী জটিলতা, সেশনজটের শঙ্কা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৬:৩৮ পূর্বাহ্ণ

দুইদিনের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) উপাচার্য নিয়োগ দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দ্রুত উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে এই দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসনের পদত্যাগের দাবির মুখে একে একে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা পদত্যাগ করেন। এসময় চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আবু তাহেরসহ পুরো প্রশাসন পদত্যাগ করেন। প্রায় এক মাস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনহীন অবস্থায় রয়েছে। যার কারণে ক্যাম্পাসে নানা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নতুন উপাচার্য পেলেও অভিভাবকহীন রয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এতে কার্যত অচল হয়ে আছে এই উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে ক্লাসপরীক্ষা বন্ধ থাকায় সেশনজটের আশঙ্কায় পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য নিয়োগে সরকার বিলম্ব করায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

অবস্থান কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, আমরা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাচাটা ভিসিকে পদত্যাগে বাধ্য করেছি। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়তে যাচ্ছেন। তাই আমরা এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান, দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দিন। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। তিনি আরও বলেন, আমরা এমন একজন ভিসি চাই, যিনি শিক্ষাবান্ধব, শিক্ষার্থীবান্ধব এবং গবেষক হবেন। আমরা এমন একজন ভিসি চাই যিনি শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিবেন, সুখদুখের সঙ্গী হবেন এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানে গড়ে তুলবেন। আমরা দুইদিনের আল্টিমেটাম দিলাম। এ সময়ের মধ্যে ভিসি নিয়োগ না দিলে আমরা কঠোর অবস্থানে যাব।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রশাসন না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনের দায়িত্ব নিয়েছে বর্তমান ডিনস কমিটি। এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে ব্যবসা প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. হেলাল উদ্দিন নিজামীকে। তবে আওয়ামীপন্থী এ শিক্ষককে নিয়ে বর্তমানে চলছে ব্যাপক আলোচনাসমালোচনা। কারণ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হেলাল নিজামী শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি এখনও ক্যাম্পাসে আওয়ামীপন্থীদের পুনর্বাসনে কাজ করছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এরকম বিতর্কিত একজন শিক্ষককে দিয়ে এখন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তবে চবির একাধিক সিনিয়র শিক্ষক জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে আর্থিক ও প্রশাসনের দায়িত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকালুরঘাট সেতুর রেলিং ভেঙে নদীতে চাঁদের গাড়ি, আহত ২
পরবর্তী নিবন্ধজাতীয় নাগরিক কমিটির আত্মপ্রকাশ লক্ষ্য রাষ্ট্র পুনর্গঠন, ফ্যাসিবাদী