‘জাতীয় সংস্কার কমিশন’ গঠনসহ ৭ দফা প্রস্তাবনা

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৮:২০ পূর্বাহ্ণ

একটি ‘জাতীয় সংস্কার কমিশন’ গঠনসহ সাত দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ এর চট্টগ্রাম শাখা। গতকাল শনিবার দুপুরে নগরের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রস্তাবনাগুলো উপস্থাপন করা হয়। লিখিত বক্তব্যে বিভিন্ন পেশার বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিত্ব ও বিদগ্ধজনদের সমন্বয়ে একটি জাতীয় সংস্কার কমিশন গঠন করে তার সুপারিশনামার আলোকে সংবিধান, বিচার বিভাগ, প্রশাসনসহ সর্বস্তরে একটি মৌলিক সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রস্তাব করা হয়।

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার সদস্য মোহাম্মদ শাহনওয়াজ। সংগঠনের শাখার আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচির পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেতা অধ্যাপক নসরুল কদির, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম মোহাম্মদ জানে আলম, ডা. আব্বাস উদ্দিন, ডা. হারুনুর রশীদ, মফিজুল হক ভূঁইয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এনামুল হক, অ্যাডভোকেট হাসান আলী চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত, ইঞ্জিনিয়ার আতিকুজ্জামান বিল্লা, জসিম উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার সুমন, অ্যাডভোকেট মফিজউল্লাহ, অ্যাডভোকেট সানজি ও ইঞ্জিনিয়ার কিবরিয়া।

অন্যান্য প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছেবিগত ১৫ বছর ধরে গুম, খুনে জড়িতদের এবং সর্বশেষ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মানবতা বিরোধী গণহত্যার পরিকল্পনাকারী, আদেশদাতা ও হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা। প্রশাসন, বিচার বিভাগ, সংবাদ মাধ্যমসহ রাষ্ট্র আর তার সহযোগী অর্গানসমূহে ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদ কায়েম আর দুর্নীতির হোতাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিগত দিনে জেল, জুলুম আর চাকরিচ্যুতির কারণে অমানবিক পরিস্থিতি শিকার ব্যক্তিবর্গকে সসম্মানে পূনর্বহাল ও ক্ষতিপূরণ প্রদান। এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ১৫ বছর ধরে হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী, দেশপ্রেমিক ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দল ও শক্তি সমূহের অবর্ণনীয় ত্যাগ ও সংগ্রামে সৃষ্ট পটভূমিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরিচালিত কোটা সংস্কার থেকে ১ দফা আন্দোলনে শক্তি সঞ্চার আর অগণিত জনতার সমর্থন পেয়েছে। তাই পূর্বাপরের এ সম্পূরক লড়াইয়ের ত্যাগ স্বীকার যাঁরা করেছেন তাদেরও সমানভাবে মূল্যায়ন করা উচিত। চতুর্থ প্রস্তাবনা হচ্ছেবৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের অর্থনৈতিক দায়িত্বভার রাষ্ট্রের কর্তৃত্বে আনয়ন, আহত, পঙ্গুত্ববরণকারীদের উন্নত চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ব্যাংকখাতে লুটপাট আর লক্ষকোটি টাকা পাচারকারী রাজনীতিবিদ, আমলা আর হাসিনার সহযোগী ব্যবসায়ী কর্পোরেট হাউজগুলোর কর্ণধারদের শাস্তি নিশ্চিত, সম্পদ বাজেয়াপ্ত, পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার জন্য দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দুঃশাসনের দূর্গ হিসাবে কুখ্যাত গণভবনকে ‘জুলাই ছাত্র গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি যাদুঘর’ হিসাবে প্রতিষ্ঠার সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ছাত্র গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে প্রদর্শিত বীরত্বগাঁথা, পটভূমি, ভালোবাসা ও নিষ্ঠুরতা, শ্লোগানগ্রাফিতি, আন্দোলনের সঞ্জিবনী শক্তি হিসাবে ব্যবহৃ স্লোগান, সংগীত, ছাত্রীমহিলাদের সাহসী উচ্চারণ আর অংশগ্রহণ সবকিছুকে উপজীব্য করে ডকুমেন্টারি, নাটক, সিনেমা, গানসহ গবেষণাধর্মী প্রকাশনায় রাষ্ট্রেয় পৃষ্টাপোষকতা প্রদান করা।

এছাড়া আর লুটপাটের ‘প্রটেকশন আমব্রেলা’ হিসাবে খ্যাত কর্পোরেট মিডিয়া হাউজ ভেঙে দিয়ে ‘এক মালিকএক গণমাধ্যম’ নীতিমালা প্রণয়নসহ গণমাধ্যমের সার্বিক পেশাদারিত্ব, গণতন্ত্রায়ন ও সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রস্তাব দেয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফেনীতে বন্যা দুর্গতদের মাঝে সিভিএআরএফের ফ্রি চিকিৎসা
পরবর্তী নিবন্ধঅভ্যন্তরীণ সম্পদের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার