নতুন সপ্তাহে চেকের মাধ্যমে যেকোনো ব্যাংকে নিজের চাহিদা অনুযায়ী নগদ টাকা তুলতে পারবেন গ্রাহক। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে আগের সপ্তাহগুলোতে চেকে নগদ টাকা তোলার সীমা বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক; আজ রোববার থেকে সে সীমা থাকবে না।
গতকাল শনিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, আজ রোববারের পর থেকে পরের দিনগুলোতে নগদ টাকা তোলার সীমা থাকছে না। এর আগে গত সপ্তাহে টাকা তোলার পরিমাণ আরও এক লাখ টাকা বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগের সপ্তাহগুলোতেও তা এক লাখ করে বাড়ানো হয়। ‘নিরাপত্তার কারণ’ দেখিয়ে ব্যাংকগুলোকে আগের সপ্তাহগুলোর শুরুতে বেঁধে দেওয়া এ নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছিল। খবর বিডিনিউজের।
সীমা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তটি গতকাল শনিবার সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে অবহিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গণ আন্দোলনের মুখে ৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অন্যান্য খাতের মত ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে সংস্কারের কথা বলছে। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক লুটপাট, দুর্নীতি ও শেয়ারবাজারে কারসাজি করে অবৈধ উপায়ে বিপুল অর্থ–বৈভবের মালিকরা যেন টাকা পাচার করতে না পারে, সেদিকেও নজর রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের।
এসব উদ্যোগের মধ্যে গত ৮ অগাস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর ব্যাংকিং লেনদেনে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ আসে। সেদিন থেকে ব্যাংক থেকে চেকের মাধ্যমে ১ লাখ টাকার বেশি তুলতে না দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। চেকের মাধ্যমে টাকা তোলার ক্ষেত্রে বা কোনো লেনদেনে সন্দেহ হলে সেটি বন্ধ করতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অবশ্য চেকের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সীমার বেশি অর্থ তোলা না গেলেও ডিজিটাল লেনদেনে যেকোনো পরিমাণ টাকা স্থানান্তর করার সুযোগ থাকছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রেণির কর্মকর্তারা ব্যাংক থেকে বেশি বেশি টাকা তোলা শুরু করেন। সে কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি বিভাগ নিয়ন্ত্রণমূলক এই নির্দেশনা দেয়।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ব্যাংক লেনদেনে ‘অতিরিক্তি সতর্কতা’ অবলম্বন করতে সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে নির্দেশনা দেয়।
ব্যাংকগুলোর প্রধান অর্থপাচার নিরোধ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে নির্দেশনাটি দিয়ে রাখে বিএফআইইউ।