দেশের পূর্বাঞ্চলে অগাস্টের বন্যায় ২৩ জেলায় ২ লাখ ৮ হাজার ৫৭৩ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; দুর্দশায় পড়েছেন ১৪ লাখেরও বেশি কৃষক। কৃষি মন্ত্রণালয় বন্যার ক্ষয়ক্ষতির সবশেষ হিসাবে বলেছে, ফসলি জমি ২ লাখের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ৩৭ লাখ ২ হাজার ৭৩৩ হেক্টর ফসলি জমি। ফলে সবমিলিয়ে কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশের উজানে পাহাড়ি ঢল আর অতি ভারি বৃষ্টির কারণে গত ২০ অগাস্ট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। দ্রুতই তা ছড়িয়ে যায় ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারে। বন্যা ১২টি জেলায় ভয়াবহ হলেও গত বৃহস্পতিবার কৃষি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ফসলি জমি আক্রান্ত হয়েছে ২৩ জেলার। সারা দেশে বন্যার পানি কৃষি জমিগুলোকে তলিয়ে দিয়েছে, ফলে কৃষকদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৮৯ জন। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির মধ্যে আউশ ৩৮ হাজার ৬৮৯ হেক্টর, রোপা আমন ১ লাখ ৪১ হাজার ৬০৯ হেক্টর, বোনা আমন ৭৬৪ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ১৪ হাজার ৯০৮ হেক্টর, শাকসবজি ১১ হাজার ২৯০ হেক্টর এবং অন্যান্যসহ মোট ২ লাখ ৮ হাজার ৫৭৩ হেক্টর।
ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় নয়টি জেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ৮০ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে রোপা আমনের উফশী জাতের বীজ, সার সহায়তা এবং খরচ বাবদ মোট ১৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এছাড়া বসতবাড়িতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষের জন্য ২২টি জেলায় দেড় লাখ কৃষককে ৫ শতাংশ জমিতে চাষের জন্য জনপ্রতি ১ হাজার ৫২৩ টাকা দেওয়া হবে, যার মোট অর্থ হবে ২২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখের বেশি। সাড়ে ৯ লাখের মত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ১১ জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ জনে; এর মধ্যে ২৯ জনই মারা গেছেন ফেনীতে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতির চিত্রও স্পষ্ট হচ্ছে। এখন পানিবন্দি অনেক পরিবার।