স্যুলি প্রুদোম(১৮৩৯–১৯০৭)। পুরো নাম র্যনে ফ্রঁসোয়া আরমঁ স্যুলি প্রুদোম। ফরাসি সাহিত্যিক। তিনি ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রথম ব্যক্তি। স্যুলি প্রুদোম ১৮৩৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই মার্চ ফ্রান্সের প্যারিসে এক সাধারণ দোকানির ঘরে স্যুলি প্রুদোমের জন্ম। বাল্যকাল থেকে স্বপ্ন ছিল প্রকৌশলী হওয়ার। সেই অনুসারে সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ভর্তিও হয়েছিলেন। প্রায় দুই বছর বয়সে তার বাবা মারা যায়। তার শৈশব কাটে মা আর বড় বোনের স্নেহ সান্নিধ্যে। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন। তার বিষয় ছিল গণিত। স্কুলের পাঠ শেষে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন উচ্চতর গণিতে। এরপর প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনার জন্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কিন্তু চক্ষুরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে এ পর্যায়ে তার পড়াশোনা ব্যাহত হয়। ফলে এখানেই শিক্ষা জীবনের ইতি টেনে তিনি প্যারিসের এক নোটারি অফিসে চাকরি নেন। সারাদিন অফিসে কাজ শেষে রাতে কবিতা লিখতেন। তিনি ছিলেন একজন ব্যর্থ প্রেমিক। তার কবিতাতেও তাই ঘুরে ফিরে এসেছে প্রেম ও ব্যর্থতার কথা। এর সাথে জীবন আর শূন্যতার জন্য তার হৃদয়ে যে দ্বন্দ্ব বিরাজ করতো তার প্রভাব সুস্পষ্ট ছিল তার কবিতাতে। স্যুলি প্রুদোমের কবিতার বিষয়বস্তু বেশ জটিল। জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাখ্যা তার কবিতায় পরিস্ফুটিত ছিল। এতে বিশেষ স্থান ছিল অচেনা বাস্তব ও চেনা অভিজ্ঞতার। ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘স্টানসান অ্যাট পোয়েমস’ প্রকাশিত হয়। এটি দিয়েই তিনি সে সময়ের সাহিত্য সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন। বিশেষত ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল সাঁতে বোভ তরুণ কবি প্রুদোমকে কাব্য জগতের উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক হিসেবে অভিহিত করেন এবং সাহিত্যাঙ্গনের সবার সঙ্গে তাকে পরিচিত করে তোলেন। ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে তার নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পিছনে কবিতার মান ও বিষয়বস্তু বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। ঐ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর ১০ তারিখে নোবেল পুরস্কারের অনুষ্ঠানে প্রুদোম উপস্থিত থাকতে পারেননি অসুস্থতার জন্য। নোবেল পুরস্কারের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে। প্রথমবারেই সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন ফ্রান্সের বিখ্যাত কবি ও প্রাবন্ধিক সুলি প্রুদোম। ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই সেপ্টেম্বর প্যারিসের দক্ষিণে অবস্থিত নিজ বাসভবনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।