দীর্ঘ তিন মাস বিরতির পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে বাংলাদেশ জয় দিয়ে তা রাঙিয়েছে। ভুটানে বৃহস্পতিবার প্রথম প্রীতি ম্যাচে ১–০ গোলে জয়লাভ করে বাংলাদেশ। ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়া গোলটি করেন খেলার পঞ্চম মিনিটে বাংলাদেশের মোরসালিন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভুটানের উচ্চতার কারণে শ্বাস নিতে সমস্যা, ঘাসের মাঠ ছেড়ে টার্ফ –সবকিছুর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের খেলায়। ভুটানকে সে অর্থে চেপে ধরতে পারল না তারা। কিন্তু শুরুর দিকে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের ভুলে পাওয়া সুযোগ শেখ মোরসালিন কাজে লাগানোর পর ম্যাচের লাগাম ঠিকই শেষ পর্যন্ত মুঠোয় রাখতে পারে বাংলাদেশ। আর কাঙ্ক্ষিত জয় নিয়ে শুরু করে ভুটান সফর। আগামী রোববার দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে আবারো মুখোমুখি হবে দুই দল।
অভিজ্ঞ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ও নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে বাইরে রেখে ভুটান ম্যাচের একাদশ সাজান কাবরেরা। ষষ্ঠ মিনিটে ভুটানী গোলরক্ষক তালগোল পাকালে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কর্নারের কাছাকাছি থেকে রাকিব হোসেনের ক্রস গ্লাভসে জমাতে পারেননি ধেনদুপ তিসেরাং। তার হাত ফসকে বেরিয়ে যাওয়া বল মোরসালিনের গায়ে লেগে পোস্টের দিকে যাচ্ছিল, দ্রুত টোকায় বাকি কাজ সারেন এই ফরোয়ার্ডই। ভুটানের জালে এ নিয়ে দ্বিতীয় গোল করলেন মোরসালিন, সব মিলিয়ে তরুণ এই ফরোয়ার্ডের আন্তর্জাতিক ফুটবলে গোল সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচটি। গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভুটানকে ৩–১ গোলে উড়িয়ে দেওয়া ম্যাচেও একবার জালের দেখা পেয়েছিলেন তিনি। অষ্টাদশ মিনিটে সতীর্থের লং ক্রস গতিতে সাদউদ্দিনকে পেছনে ফেলে নিয়ন্ত্রণে নেন নিমা ওয়াংদি। কিন্তু তার শট পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে কর্নারের বিনিময়ে ক্লিয়ার করেন মিতুল মারমা। কর্নারে ইয়েশে গাইয়েতলসেনের হেড দূরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এরপর দুই দলের খেলায় গতি কমে যায় আরও। বিরতির আগ পর্যন্ত কোনো দলই পারেনি তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে হঠাৎই টার্ফে শুয়ে পড়েন রাকিব। কিছুক্ষণ পর উঠে দাঁড়ান এই ফরোয়ার্ড। দ্বিতীয়ার্ধে তাকে আর নামাননি কাবরেরা, বদলি নামেন শাহরিয়ার ইমন। দ্বিতীয়ার্ধেও খেলা চলতে থাকে একই ধাঁচে, ধীরলয়ে। ৬১তম মিনিটে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমকে তুলে অনূর্ধ্ব–২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী দলের রাব্বী হোসেন রাহুলকে নামান কাবরেরা। লাল–সবুজ জার্সিতে অভিষেকের অপেক্ষাও ফুরালো এই ফরোয়ার্ডের। ৭৪তম মিনিটে হৃদয়ের বদলি নামেন জামাল। এরপরই ভুটান আক্রমণ শাণায়। তবে সতীর্থের ক্রসে দূরের পোস্টে থাকা বিকাশ প্রধান ছুটে গিয়ে পা চালালেও পাননি বলের নাগাল। ১০ মিনিট পর সতীর্থের ফ্রি কিকে একই ভাবে পা–বলের সংযোগ ঘটাতে পারেন পেমা ধেনদুপ। ৮৭তম মিনিটে ভালো আড়াআড়ি ক্রস বাড়িয়েছিলেন মোরসালিন, কিন্তু ইমন পা ছোঁয়ালেও বল পোস্টে রাখতে পারেননি। নিখুঁত স্লাইডে ক্লিয়ার করেন এক ডিফেন্ডার। বাকি সময় নির্বিঘ্নে পার করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। এ নিয়ে পরিসংখ্যানে ভুটানের ওপর আধিপত্য আরও বাড়ালো বাংলাদেশ। ১৫ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় এখন ১২টি, বাকি দুই ম্যাচ ড্র ও একটিতে হার।
এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের ড্র সামনে রেখে র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতির জন্য যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশের চাওয়া ছিল জয়। প্রথম ম্যাচ জিতে সে চাওয়া পূরণের পথে এগেলো বাংলাদেশ।