খাগড়াছড়িতে বন্যা দুর্গতদের জন্য ‘এক টাকায় বাজার’

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ

এক টাকায় মিলছে তিন কেজি চাল, মুরগি, মাছ, পেঁয়াজ, ডাল, তেলসহ ৭টি ভোগপণ্য। ১৯টি নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মধ্যে ৭টি পণ্য প্রয়োজন অনুসারে ক্রয় করতে পারছেন একজন ক্রেতা। উচ্চ মূল্যের বাজার অনেকটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমন বাজার বসেছে খাগড়াছড়িতে। বাজারের সব ক্রেতাই সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। এক দিনের এই বাজার থেকে স্বল্প আয়ের ৫শ মানুষ তাদের ভোগ্যপণ্য ক্রয় করেছেন।

জীবনে প্রথমবারের মতো এমন বাজার থেকে পণ্য কিনতে পেরে খুশি স্থানীয়রা। বাজারে আসা ক্রেতা মনির হোসেন, মিম আক্তার, বিপাশা চাকমা বলেন, খুব ভালো লাগছে। এমন বাজার তো আগে কখনো দেখিনি। এক টাকা দিয়ে ৭টা টোকেন নিয়েছি। ৭টা টোকেন দিয়ে সাত রকমের পণ্য কেনা যায়। চাল কিনলাম তিন কেজি, ডাল, মুরগি, মাছ, ডিম কিনলাম। টোকেন ছাড়াও কিছু পণ্য ফ্রিতে দিয়েছি। বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখানে কেনাকেটা করে অনেক প্রয়োজনীয় জিনিসের ঘাটতি পূরণ হয়েছে।

বন্যা দুর্গত মানুষের জন্য এমন প্রয়োজনের বাজার বাসিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়ন ও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। গতকাল বুধবার সকালে রিজিয়ন মাঠে এর উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি রিজিয়নের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান।

এক টাকায় বাজারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রিজিয়ন কমান্ডার বলেন, বন্যা দুর্গত স্বল্প আয়ের মানুষ যারা বাজার থেকে উচ্চমূল্যে জিনিসপত্র কিনতে পারেন না তাদের সহায়তা করার জন্য এই ধরনের বাজারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাজার থেকে একজন ক্রেতা মাত্র ১ টাকায় এক হাজার টাকা মূল্যের ভোগ্যপণ্য কিনতে পারবেন। এই নিয়ে জেলায় ৬ হাজার বন্যা দুর্গত পরিবারকে সহায়তা করেছে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন। ভবিষ্যতে এই ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন রিজিয়ন কমান্ডার।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড সদস্য মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ১০টি বন্যা দুর্গত পরিবারকে পুর্নবাসনের জন্য নির্মাণ সামগ্রী ও গবাদিপশু দেয়া হয়েছে। ২১ অগাস্ট থেকে খাগড়াছড়িতে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন বন্যার্ত মানুষের জন্য কাজ করছে। বন্যার পানি নেমে গেলেও মানুষের অভাব রয়ে গেছে। তাদের প্রয়োজন অনুভব করে আমরা একটি বাজার দিয়েছি যেখান থেকে তারা প্রয়োজন অনুযায়ী বাজার করতে পারবে। এটা চাপিয়ে দেয়া ত্রাণ নয়। এক টাকা দিয়ে তারা ১৯টি পণ্যের মধ্যে যেকোন ৭টা পণ্য ক্রয় করতে পারবে। তাদের যেটা প্রয়োজন সেটা বাছাই করে নিতে পারবে। সেক্ষেত্রে বলা যায়এটি দুর্গত মানুষের বাছাই করার যে অধিকার সেটি নিশ্চিত করতে চেয়েছি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল হাসনাত জুয়েল, রিজিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর জাবির সোবাহন মিয়াদ প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছাত্রশিবিরের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে নৈতিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধসৈকতে গোসল করতে নেমে পর্যটক নিখোঁজ