অতিবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে সীতাকুণ্ড উপকূলের চারটি এলাকায় বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুত সংস্কার করা না হলে বেড়িবাঁধ পুরোপুরি ভেঙে লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে কর্তৃপক্ষ বলছে, নদী ভাঙন রোধে ব্যবহারের ব্লক সাগর উপকূলে ব্যবহার করায় অনেক অংশে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, সীতাকুণ্ড উপকূলে বেড়িবাঁধ রয়েছে ২৫ কিলোমিটার। জোয়ারের প্রবল স্রোতে বেড়িবাঁধের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের সিকদার খাল, আকিলপুর সৈকত, কুমিরা ইউনিয়নের আলেকদিয়া ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ঘোড়ামরা এলাকায় প্রায় চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের আকিলপুর সৈকতের দুটি স্থানে প্রবল জোয়ারের আঘাতে ভেঙে কাঁচা বেড়িবাঁধের প্রস্থ এক ফুটে এসে দাঁড়িয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে সেটি ভেঙে যেতে পারে। অন্তত ১০টি স্থানে ব্লক সরে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্লক বেড়িবাঁধ। সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ঘোড়ামরা এলাকায় একাধিক স্থানে বিলীন হয়ে গেছে বেড়িবাঁধ। বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের সিকদার খালের স্লুইসগেট এলাকায়ও বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। আকিলপুর এলাকার বাসিন্দা খোরশেদ আলম বলেন, সাগর থেকে বালু তোলার কারণে কাঁচা বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ারের পানি আবার বাড়লে দুটি স্থানে বাঁধ ভেঙে লবণাক্ত পানি ঢুকে আশপাশের লোকালয় ডুবে যায়। অপর বাসিন্দা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, গত বছর ঘূর্ণিঝড়ে আকিলপুর সৈকতের ব্লক বেড়িবাঁধের বেশ কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। গেল দুই মাস আগে সেখানে সংস্কারের নামে কিছু বালু দিয়ে এর ওপর ব্লক বসান ঠিকাদারের লোকজন। সেই অংশটিতে আবারও ব্লক সরে গিয়ে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বশর বলেন, বেড়িবাঁধের কাজে অনিয়ম হওয়ায় পুরো ইউনিয়ন এখন হুমকির মুখে। দ্রুত সিসি ব্লক দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না গেলে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সীতাকুণ্ডের উপ–সহকারী প্রকৌশলী এসএম তারেক বলেন, সীতাকুণ্ডের উপকূলীয় স্লুইস গেটগুলো পুননির্মাণ এবং বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেটি পাস হলে নতুন করে কাজ করা হবে। কিন্তু বর্ষায় বেড়িবাঁধ কোনো প্রকারে টিকিয়ে রাখা চ্যালেঞ্জিং। এ লক্ষ্যে বেড়িবাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, আকিলপুর এলাকায় যে ব্লক বসানো হয়েছে, তা আকারে তুলনামূলক ছোট। এগুলো সাধারণত ঢেউ নেই এমন নদী এলাকায় ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের ব্লক বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের উপযোগী নয়। ঢেউয়ের চাপ সামাল দিতে হলে নতুন করে ভারী ব্লক তৈরি করে এরপর বেড়িবাঁধ পুননির্মাণ বা মেরামত করতে হবে।