বন্যা এবং পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ৬টি উপজেলায় ভেঙে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) হিসেব মতে, চট্টগ্রামে উপজেলা পর্যায়ে প্রায় ৬০৫ কিলোমিটার সড়ক তছনছ হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২৫টি ব্রিজ ও কালভার্ট। একেবারে লণ্ডভণ্ড অবস্থা ফটিকছড়ি, মীরসরাই ও হাটহাজারী উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। বানের পানির স্রোতে ভেসে গেছে সড়কের কার্পেটিং। সড়কের মাঝখানে বড় বড় গর্তের পাশাপাশি দীর্ঘ সড়কের একাংশ ভেঙে পড়েছে।
এলজিইডি চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বন্যায় চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফটিকছড়ি ও মীরসরাই উপজেলায়। এছাড়া হাটহাজারী, বাঁশখালী, রাউজান, বোয়ালখালীসহ অন্যান্য উপজেলায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়ক আপাতত জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করে সংযোগ স্থাপন করা হলেও সড়কগুলো নতুনভাবে মেরামত করে পূর্বের অবয়বে ফিরিয়ে আনতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা লাগবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা পর্যায়ের প্রকৌশলীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অনেক সড়কের পুরো কার্পেটিং বন্যার পানির স্রোতে ভেসে নিয়ে গেছে। সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। উপজেলার অনেক সড়কের ব্রিজ ও কালভার্টের মাটি সরে গেছে। অনেক কালভার্ট ও সড়ক দেবে গেছে। এলজিইডির সড়কগুলোর পাশাপাশি তছনছ হয়ে গেছে গ্রামীণ এইচবিবি সড়কগুলো। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসান আলী আজাদীকে বলেন, বন্যায় চট্টগ্রামে সব উপজেলায় কম–বেশি সড়কের ক্ষতি হয়েছে। আমরা এখনো উপজেলা পর্যায়ে সরেজমিনে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি দেখছি। তবে প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছি। বন্যায় এখন পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ের চিত্রে ৬০৫ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ১২৫টি ব্রিজ–কালভার্টের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো মেরামতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা লাগবে। এই ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আমরা ঢাকায় প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। তিনি বলেন, উপজেলা প্রকৌশল অফিসসহ মিলে এখন জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো যানবাহন চলাচলের জন্য সংযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।
প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসান আলী বলেন, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফটিকছড়ি উপজেলায়। ফটিকছড়িতে আমাদের হিসেব মতে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপর মীরসরাই ও হাটহাজারী উপজেলায় ৫০ কিলোমিটার করে, বাঁশখালী উপজেলায় ৪০ কিলোমিটার, রাউজান উপজেলায় ৩০ কিলোমিটার এবং বোয়ালখালী উপজেলায় ৪০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্য উপজেলায়ও ক্ষতি হয়েছে।
বন্যার পানি কমে যাওয়ার পর থেকে প্রত্যেক উপজেলায় জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতে এখনো ঢাকা থেকে কোনো বরাদ্দ আসেনি। উপজেলা পর্যায়ে নিয়মিত মেরামতের কাজ চলে। উপজেলা প্রকৌশল অফিস এবং আমরা মিলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে।