নগরীর অক্সিজেন–কুয়াইশ সংযোগ সড়কের নাহার গার্ডেনের সামনে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে খুনের শিকার মোহাম্মদ আনিস ও মাসুদ কায়সারের স্বজন ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, মোহাম্মদ আনিস শিকারপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া মাসুদ কায়সার আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক। তারা দুজনই হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুস গণি চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। গত কোরবানির ঈদের পর শিকারপুর ইউনিয়নে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। সে সময় উভয় পক্ষ থানায় পাল্টাপাল্টি মামলাও দায়ের করে। বলা যায়, পূর্বশত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে আনিস ও মাসুদকে খুন করা হয়েছে।
নিহত আনিস হাটাহাজরী শিকারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম কুয়াইশ এলাকার ওসমান আলী মেম্বারের বাড়ির মৃত মো. ইসহাকের ছেলে। আনিসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার সত্তরোর্ধ্ব মা সায়রা খাতুন মাটিতে বসে আহাজারি করছেন। পাশে বসা তার দুই নাতি–নাতনিও কাঁদছেন। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বিলাপ করতে করতে বলেন, আমার ছেলে কখনো কারো ক্ষতি করেনি। কেন তাকে মেরে ফেলা হলো, এখন আমার দুই নাতি–নাতনিকে কে দেখবে? এদিকে স্বামীকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে গেছেন আনিসের স্ত্রী এ্যানি আকতার। তিনি শুধু বললেন, তার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চান। অপরদিকে পশ্চিম কুয়াইশ আব্দুস সাত্তার বাড়ি প্রকাশ বিল্লাবাড়ির বাসিন্দা মাসুদ কায়সার। তার নিজ বাড়ি বোয়ালখালী। তবে নানা বাড়িতে থাকার সূত্রে পড়ালেখা ও বেড়ে ওঠা এখানে। গতকাল তার বাড়িতেও চলে শোকের মাতম। মাসুদের নানী ছেনোয়ার বেগম নাতির শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। মাসুদের প্রতিবেশিরা জানান, এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল সে। কিন্তু কখনো কারো সাথে কোনো বিষয়ে জোর জবরদস্তি করেনি। তবে কিছু রাজনৈতিক বিষয়ে ঝামেলার কথা শুনেছিলেন বলে জানান তারা।
এদিকে মাসুদ কায়সারকে হত্যার ঘটনায় ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২ জনকে আসামি করে হাটহাজারী থানায় গতকাল মামলা দায়ের হয়েছে। সন্ধ্যায় নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ আরিফ বাদী হয়ে মামলা করেন বলে জানান হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। এছাড়া মো. আনিসের (৩৫) পরিবার গতকাল শুক্রবার রাতের মধ্যেই মামলা করবেন বলে জানান নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিংহ।
উল্্েলখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন অনন্যা আবাসিক এলাকার অক্সিজেন–কুয়াইশ সড়কের নাহার গার্ডেনের সামনে দুবর্ৃৃত্তদের গুলিতে নিহত হন আনিস ও মাসুদ।