শিক্ষক নিশ্চয় কোন ফেরেস্তা নয়। কোন ভিনগ্রহের মানুষও নয়। এই সমাজেরই সৃষ্ট একজন মানুষ। তবে চাকরি হিসাবে শিক্ষকতা নিশ্চয় অন্য যে কোনো পেশা থেকে আলাদা। আমাদের মহান শিক্ষকবৃন্দ শিক্ষকতা পেশার এই বিশেষত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। সব শিক্ষক একরকম নয়। দোষত্রুটি, ঘাটতি অবশ্যই থাকতে পারে। দুর্নীতিগ্রস্তও হতে পারে। তবে তার বিচার কি আমাদের রাষ্ট্র আর সমাজ শিক্ষার্থীদের উপর অর্পণ করেছে! যে কাজ অভিভাবকরা করার কথা সে কাজ শিক্ষার্থীরা হাতে তুলে নিচ্ছে। এতে অভিভাবকদের নৈতিক ভিত্তিটা আর টিকে রইল কই! শিক্ষার্থীরা অবশ্যই, একজন শিক্ষক যদি অন্যায়–অবিচার বা দুর্নীতি করে, তার বিরুদ্ধে আন্দোলন–সংগ্রাম করতে পারে, দাবি–দাওয়া দিতে পারে। কিন্তু বিচার করার অধিকার নিশ্চয় নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। মনে রাখা উচিৎ শিক্ষক কেবল একজন ব্যক্তি নয়, একটা সমাজ। সবকিছু নিয়মাতান্ত্রিকভাবে হওয়া উচিৎ। এই শিক্ষার্থীরা কি ‘গান্ধারীর আবেদন’ বুঝেন! অভিভাবকরা বুঝেন! শিক্ষকরাই কিন্তু নবকুমারের সেই কথাটা বলে শিক্ষার্থীদেরকে শ্রেয়র পথে উৎসাহিত করার চেষ্টা করেন– তুমি অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন? হৃদয় মণ্ডল আর স্বপন কুমারের মতো স্যারদের কথাও আমাদের মনে আছে। মনে আছে তাঁদের সাথে কী হয়েছিল। তাই চাই, এই পরিবর্তিত সময়ে মূল্যবোধহীন সমাজ অরণ্যে কপালকুণ্ডলার সেই বাক্যটি শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে মিথ্যা প্রমাণিত হোক– পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ!