সরবরাহ সংকটের অজুহাতে আবারও পাইকারি ও খুচরা বাজারে ডিমের রেকর্ড দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে ডজনপ্রতি ডিমের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত। পাইকারি ডিম ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্যার কারণে ডিমের সরবরাহ কমে গেছে। পাহাড়তলী ডিমের পাইকারি আড়তে আগে প্রতিদিন ১৭–১৮ গাড়ি ডিম আসত। এখন সেটি অর্ধেকে নেমে এসেছে। এছাড়া ত্রাণ হিসেবেও অনেকে ডিম কিনছেন।
অন্যদিকে ফেনী, কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ডিম দিয়ে তাদের চাহিদা মেটানো হতো। বর্তমানে সেখানে বন্যা পরিস্থিতির কারণে সেটি হচ্ছে না। এতে ডিমের বাজারে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রামে বাজারে বেশিরভাগ ডিমের সরবরাহ হয় টাঙ্গাইল থেকে। এদিকে গতকাল ডিম, মুড়িসহ ভোগ্যপণ্যের দোকানে অভিযান চালানো হয়েছে।
গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পাইকারিতে ১০০ পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২৭০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি পিস ডিমের দাম পড়ছে ১২ টাকা ৭০ পয়সা। এদিকে খুচরা বাজারে গতকাল সেই ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৮০ টাকায়। প্রতি পিসের দাম পড়েছে ১৫ টাকা। অর্থাৎ পাইকারির তুলনায় প্রতি পিস ডিম ২ টাকা ৩০ পয়সা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। দামপাড়া এলাকার খুচরা ডিম বিক্রেতা মোহাম্মদ রানা বলেন, আমরা পাইকারি বাজার থেকে প্রয়োজন মতো ডিম এনে বিক্রি করি। পাইকারি বাজারে ডিমের দাম ওঠানামার সাথে খুচরা বাজারে ডিমের বাড়া–কমার কোনো সম্পর্ক নেই।
চট্টগ্রাম ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল শুক্কুর আজাদীকে বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির কারণে ডিমের সরবরাহ কমে গেছে। অনেক আড়তে ডিম নেই। তাই দামও বেড়েছে। সরবরাহ বাড়লে দাম আবার কমে যাবে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, বাজারে প্রতিটি পণ্যই নিয়ে চলছে সিন্ডিকেট। ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক পণ্য নিয়ে খেলছেন। এর সর্বশেষ সংযোজন হচ্ছে ডিম। প্রশাসনের উচিত ডিমের বাজারে নিয়মিত মনিটরিং করা।
ডিমসহ ভোগ্যপণ্যের দোকানে অভিযান : নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন বক্সিরহাটের চিড়া, মুড়ি, ডিম, কাচামরিচ, পেঁয়াজ, রসুন আদাসহ কয়েকটি ভোগ্যপণ্যের দোকানে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম। গতকাল চলা এ অভিযানে বন্যার পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে মূল্য বৃদ্ধির দায়ে ৪টি প্রতিষ্ঠানকে ২৭ হাজার জরিমানা করা হয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফয়েজ উল্লাহ। তিনি বলেন, বন্যার পরিস্থিতির অজুহাতে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে–এমন অভিযোগ পেয়ে বিভাগীয় কার্যালয় ও জেলা কার্যালয় যৌথভাবে অভিযান চালিয়েছে। অভিযানে ৪ প্রতিষ্ঠানকে ২৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে এই ধরনের তদারকি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।