দুর্নীতিবাজ, পল্টিবাজরা যেন সিজেকেএস এ জায়গা না পায়

নবীন প্রবীণ ক্রীড়া সংগঠকদের এক আওয়াজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ২৭ আগস্ট, ২০২৪ at ৮:৫৯ পূর্বাহ্ণ

গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে পতন হয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের। সেদিনই দেশ ছেড়েছেন তিনি। এরপর থেকে দেশের সর্বক্ষেত্রে বইছে পরিবর্তনের হাওয়া। এরই মধ্যে গত ২১ আগস্ট দেশের সবগুলো বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি ভেঙ্গে দিয়েছে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। বলা হয়েছে এডহক কমিটি গঠন করার জন্য। সে ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রামের সুবিধাবাদী ক্রীড়া সংগঠকরা নিজেদের আসল চেহারা প্রকাশ করতে শুরু করেছে। সেদিন থেকে দীর্ঘ দিন আওয়ামীলীগ আমলে সুবিধা ভোগ করা কর্মকর্তারা নিজেদের রং বদলে ছুটতে শুরু করেছে বিএনপি নেতাদের বাসায় বাসায়। তারা নিজেদের বিএনপি হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করছেন। অথচ গত ১২/১৫ বছর কি ছিল সেটা সবাই জানেন। এরই প্রেক্ষিাত গতকাল নগরীর চট্টগ্রাম ক্লাবে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার নবীন এবং প্রবীণ কাউন্সিলররা মিলে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। বর্তমান পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন বিশেষ করে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা নিয়ে করনীয় কি তা নিয়ে মতবিনিময় সভায় বসে কাউন্সিলররা। সেখানে সবার কন্ঠে একটাই আওয়াজ উঠে, তা হচ্ছে সুবিধাবাদীরা যেন রং বদলে আবার চেয়ার দখলে রাখতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে সবাইকে। সবার কন্ঠে একটি আওয়াজই বেরিয়ে এসেছে তা হচ্ছে ক্রীড়াঙ্গনের দায়িত্ব যেন সৎ, দক্ষ, নিবেদিতপ্রাণ ক্রীড়া সংগঠকদের হাতে উঠে। চট্টগ্রামের খেলাধুলার মান উন্নয়নে যারা নিরলসভাবে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে যাচ্ছে অথচ যারা কখনো ক্ষমতার স্বাদ পায়নি তাদের যেন এডহক কমিটি হোক বা নির্বাচিত কমিটি হোক সবখানে মূল্যায়ন করা হয়। চট্টগ্রামের খেলাধুলাকে এগিয়ে নিতে হলে সৎ, যোগ্য এবং নিবেদিতপ্রাণ ক্রীড়া সংগঠকের কোন বিকল্প নেই। মাঠে ময়দানে যারা বছরের পর বছর নিজেদের শ্রম, মেধা, অর্থ দিয়ে কাজ করে যান, নির্বাচন এরে তারা বাতিলের খাতায় চলে যায়। জায়গা করে নেয় সুবিধাবাদী, চাটুকার, তেলবাজ এবং যারা মাঠে থাকেনা তারা। সে সাথে যোগ হয় রাজনৈতিক কর্মীরা। যারা উড়ে এসে জুড়ে বসে ক্রীড়া সংগঠকদের মাথার উপর চড়ি ঘুরানোর চেষ্টা করে। এবার সে অবস্থার অবসান চান ক্রীড়া সংগঠকরা। চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনকে সত্যিকারের ক্রীড়া সংগঠকদের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয় মতবিনিময় সভায়।

গতকালের এই মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার সুলতানুল আবেদীন চৌধুরী, সাবেক জাতীয় কারাতে খেলোয়াড় শাহজাদা আলম, সাবেক জাতীয় অ্যাথলেট শর্মিষ্টা রায়, সাবেক জেলা দলের ফুটবলার মোহাম্মদ শাহজাহান, সিজেকেএস কাউন্সিলর আকতার পারভেজ হিরো, সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, আলী ইকরাম রোমি, এম এ মুছা বাবলু, রাসেল, ক্রীড়া সাংবাদিক সাইফুল্লাহ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম, ক্রীড়া সংগঠক আহসানুল হক চৌধুরী ইমাদ এবং মাহবুবুর রহমান সাগর। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সিজেকেএস কাউন্সিলর কল্লোল দাশ। অনুষ্ঠানে সিজেকেএস কাউন্সিলরদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আসাদুজ্জামান, হারুন অর রশিদ, প্রবীণ কুমার ঘোষ, সুলতান মাহমুদ খান শাহীন, জসিমুল হুদা, প্রসেনজিত দত্ত রাজু, মো. মামুন, এ এস এম সাইফুদ্দিন চৌধুরী, ফারুখ আহমেদ, সাইমউল হাসান রুম্মন, শওকত হোসাইন, সাইফুল আলম বাপ্পি, আজাদ রহমান, ফয়সাল ফিরোজ মিকি, এস এম ইকবাল মোরশেদ, রায়হান উদ্দিন, জাফর ইকবাল, তানভীর হাসান, ইয়াছির আরাফাত পাবলু, আবুল মনসুর, মো. সিরাজুল ইসলাম, মকসুদুর রহমান বুলবুল, মো. বাবুল, আশরাফুজ্জামান, রাসেল চৌধুরী, মো. কামরুল ইসলাম। এছাড়া সাবেক কাউন্সিলর, সাংবাদিক, বিভিন্ন ইভেন্টের ক্রীড়াবিদ, সাবেক ক্রীড়াবিদ এবং ক্রীড়া সংগঠকরা উপস্থিত ছিলেন।

ক্রীড়া সংগঠকরা বলেন চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে বারে বারে নানা রূপে একই মানুষ গুলো ক্ষমতায় আসে। ফলে তারা এক পর্যায়ে গিয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করে। কারণ তখন তারা মনে করে তারা ছাড়া আর কেউ নেই। তখন তারা একটি কঠিন সিন্ডিকেট তৈরি করে। যা বারবার চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনকে অবনমনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কারণ যে মানুষ গুলো নানা ছলচাতুরি করে বারবার ক্ষমতায় আসে যদিও যোগ্য লোকও অনেকেই আছে। কিন্তু তারা সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে। সে মন্দ এবং সুবিধাবাদি মানুষ গুলো ধীরে ধীরে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে খেলাধুলার ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।

যার প্রমাণ জাতীয় পর্যায়ে দিনকে দিন পিছিয়ে পড়ছে চট্টগ্রাম। তাই সময় এসেছে এখন সত্যিকারের ক্রীড়া সংগঠকদের হাতে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন তুলে দেওয়ার। মতবিনিময় সভায় সিদ্ধান্ত হয় নতুন জেলা প্রশাসক যোগদান করলে তার হাতে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে একটি স্মারকলিপি প্রদানের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভারতের বিপক্ষে মনের তাড়না থেকেই খেলেছে দল
পরবর্তী নিবন্ধসাকিব কখনো অমানবিক কাজে লিপ্ত হবে তেমন মনে করেন না মুশফিক