নগরীর ৬টি থানায় ভাঙচুর–লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১ লাখ ১৫ হাজার ৪শ’ জনকে আসামি করে ৬টি পৃথক মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর সিএমপির ১৬টি থানার মধ্যে ৮টি থানায় হামলার ঘটনা ঘটে। ওই সময় থানাগুলোতে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ৮টি থানার মধ্যে ৬টি থানা পুলিশ পৃথক পৃথক মামলা রেকর্ড করেছে। এর মধ্যে কোতোয়ালী, সদরঘাট, পাহাড়তলী, আকবর শাহ, ইপিজেড, পতেঙ্গা থানা পুলিশ মামলা রেকর্ড করেছে। ডবলমুরিং এবং হালিশহর থানায় হামলার ঘটনায় মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ৫ আগস্ট বিকেলে সরকারের পতনের পর হাজার হাজার বিক্ষুদ্ধ মানুষ থানাগুলোতে চড়াও হয়। তারা দেশীয় অস্ত্র, লোহার রড, পেট্রোল বোমা ও ককটেল নিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। হামলাকারীদের ভয়ে পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে থানা ছেড়ে পালিয়ে গেলে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে অস্ত্র ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এছাড়া দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে থানার রেজিস্ট্রারপত্র, সরকারি ও বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এবং মালামাল পুড়ে যায়। এ ঘটনায় অনেক পুলিশ সদস্যও আহত হন।
ঘটনাগুলোর ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক পৃথক মামলা রেকর্ড করে। এর মধ্যে কোতোয়ালী থানার মামলায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার, পতেঙ্গা থানার মামলায় ২০ থেকে ২৫ হাজার, ইপিজেড থানার ২৫ থেকে ৩০ হাজার, পাহাড়তলী থানার ১৪ থেকে ১৫ হাজার, আকবর শাহ থানার ৪ থেকে ৫ হাজার এবং সদরঘাট থানার মামলায় ৩শ’ থেকে ৪শ’ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
সিএমপির সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বদলি হওয়ার একদিন আগে দৈনিক আজাদীকে বলেছিলেন, প্রতিটি থানা এবং পুলিশ ফাঁড়ি পৃথক পৃথক মামলায় ক্ষয়ক্ষতিসহ বিস্তারিত উল্লেখ করে মামলা রেকর্ড করে রাখবে। সরকারি জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে, এগুলোর ব্যাপারে একটি রেকর্ড রাখার জন্যই মূলতঃ মামলা করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডিসি–মিডিয়া) কাজী তারেক আজিজ ৬টি থানা পুলিশের মামলা রুজুর কথা স্বীকার করে বলেছেন, সবগুলো থানাই পৃথক পৃথক মামলা করেছে। শুধু ডবলমুরিং এবং হালিশহর থানার দুইটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, থানায় হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে গুরুত্বপূর্ণ নথি ও বিভিন্ন মামলার আলামত নষ্ট করার পাশাপাশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট হয়েছে। এ ঘটনায় ১৮৬০ সালের পেনাল কোড আইনের বিভিন্ন ধারায়, বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও পুলিশের সংশ্লিষ্ট থানা সূত্রে জানা গেছে।