টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও পূর্ণিমার জোয়ারে কর্ণফুলী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে বোয়ালখালীর কিছু এলাকা। এতে সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলার প্রকৌশলী রেজাউল করিম।
উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জোয়ারের পানির কারণে উপজেলার বেশ কিছু সড়ক নাজুক অবস্থা হয়েছে এবং কয়েকটি সড়ক দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তারমধ্যে মুরাদ মুন্সির হাট–চৌধুরী হাট–কধুরখীল ইউনিয়ন পরিষদ সড়কের ৪.৬ কিলোমিটার, সারোয়াতলী–পোপাদিয়া–চরণদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ সড়কের ৯.৫ কিলোমিটার, কালাইয়ার হাট–কেরাণী হাট–কালাচাঁন ঠাকুর সড়কের ৪.৩ কিলোমিটার, আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ–মৌলভী বাজার সড়কের ২.২ কিলোমিটার, শাকপুরা ইউনিয়ন পরিষদ–নানিয়ারমার ঘাট–শরফ আলী মুন্সি সড়ক–শহীদ ধিরেন্দ্র–আমিনুল হক চেয়ারম্যান সড়কের ৩.৬ কিলোমিটার, পূর্ব গোমদন্ডী চেয়ারম্যান সড়কের ৩.৬ কিলোমিটার, কালুরঘাট–চরণদ্বীপ–ভান্ডালজুড়ি–সরফভাটা–গুদামঘর সড়কের ২২.৪ কিলোমিটারসহ উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের প্রায় ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে এবং আমতল–সফর আলী মুন্সি–পশ্চিম গোমদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদ–খাজা সড়কের ৭.৫ কিলোমিটার ও সামশুল আলম সড়কের ৩.৬৫ কিলোমিটার নাজুকসহ সম্পূর্ণ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। যার ফলে এই দুই সড়ক দিয়ে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসব সড়ক সংস্কারে প্রায় ৬৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা লাগতে পারে বা তার বেশিও লাগতে পারে।
চরখিজিরপুর এলাকার বাসিন্দা মো. লোকমান বলেন, আমাদের সড়কটি মাঝখানে দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। গাড়ি চলাচলে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হওয়ায় সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আমজাদ হোসেন বলেন, সামশুল আলম সড়কটি নদীর তীরবর্তী হওয়ায় সড়কের অধিকাংশ ভেঙে গেছে। দুই একদিনের মধ্যে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে। তখন দুই দিকের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হলে রোগী নিয়ে বিপাকে পড়বে স্থানীয়রা।
গতকাল রবিবার বিকেলে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিমাদ্রী খীসা, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলার প্রকৌশলী রেজাউল করিম, সহকারী উপ–প্রকৌশলী মো. ফারুক হোসেন ও সহকারী উপ–প্রকৌশলী মো. আবু হুরায়রা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, ড্রিডাস সফটওয়্যারের মাধ্যমে এলজিইডি রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিটে সড়কগুলোর তথ্য প্রেরণ করা হয়েছে। যে সড়কগুলো বরাদ্দ দিবে সেগুলো সংস্কার করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিমাদ্রী খীসা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কিছু সড়ক পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব। খাজা সড়ক ও সামশুল আলম সড়কটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে দ্রুত এলজিইডি রক্ষণাবেক্ষণ খাত থেকে ব্যয় করে সড়কগুলো সংস্কার করা হবে। বাকিগুলোর বিষয়ে এলজিইডি প্রকৌশলীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।